অরিত্র কুণ্ডু, ঝিনাইদহ : কৃষক মজনুর বাড়ি জুড়ে এখন শুধুই কান্না। গোয়ালের দুইটি গরু হারিয়ে এখন তিনি পাগল প্রায়। গরু দুইটি ছিল তার সম্পদ ও শেষ সম্বল। 

ঝিনাইদহের মধুপুর গ্রামের হাবিবর জোয়াদ্দারের ছেলে কৃষক মজনু রবিবার (২৭ মার্চ) সকালে মাঠে জমি চাষ করতে যান। জমির উপর ছিল একটি খুটি। বৈদুতিক খাম্বার কাছে গেলেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে গরু দুইটি ছটফট করে প্রাণ হারায়। তিনিও সামান্য আহত হন। দুইটি চাষের গরুর মূল্য আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকা বলে তিনি জানান। ওই গ্রামের রুহুল আমিন নান্টু নামে এক কৃষক অভিযোগ করেন, ঝিনাইদহ ওজোপাডিকোর চরম অবহেলার কারনে ৫ মাস আগে আজিজ সেখ নামে আরো একজন কৃষকের ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা মূল্যের একটি গাভী গরু মারা যায়। সে সময় ঝিনাইদহ বিদ্যুৎ বিভাগকে অবহিত করা হলেও এখনো পর্যন্ত কোন ক্ষতি পূরণ পায়নি। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কটতে আবারো দুইটি গরু মারা গেলো।

এলাকাবাসী জানায়, পোড়াহাটী ইউনিয়নের মধুপুর এলাকার লাইন ৫০ বছরের পুরানো। লাইনের কোথাও ইট ঝুলছে, আবার কোথায় বাঁশের চটা বাঁধা আছে। খাম্বায় কোন আর্থিং না থাকার কারণে প্রতিনিয়ত এই দুর্ঘটনা ঘটছে বলে এলাকাবাসীর ধারণা। গ্রামবাসী আরো জানায় সামান্য বাতাস হলেই তারে তার লেগে আগুন ধরে যায়। এমন দৃশ্য প্রতিদিন তাদের দেখতে হয়। এদিকে এ ঘটনার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ঝিনাইদহ সদর ওসি শেখ মোহাম্মদ সোহেল রানা।

তিনি বলেন, বিদ্যুৎ বিভাগের অবহেলার কারণে এমটি ঘটতে পারে বলে তার ধারণা। ঝিনাইদহ ওজোপাডিকোর নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদুল ইসলাম চৌধুরী তাদের অবহেলার দায় অস্বীকার করে বলেন, এমন ঘটনা যদি ঘটে তবে আকস্মিক ও অনাকাঙ্খকিত। এ জন্য আমাদের কোন কর্মী বা বিভাগ দায়ী নয়। তিনি বলেন গরুর মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষতি পূরণের বিধান থাকলেও তা স্পষ্ট করে বলা নেই। ফলে ক্ষতি পূরণ কে দিবে তা নির্ধাারণ করা খুবই মুশকিল। তারপরও কেও যদি ক্ষতি পুরণ পাওয়ার পথ বাতলে দেয় তবে আমি ব্যবস্থা নিতে পারবো।

(একে/এসপি/মার্চ ২৭, ২০২২)