অরিত্র কুণ্ডু, ঝিনাইদহ : ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হাট গোপালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষা অধিদপ্তরের দেওয়া আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার পর রেবা খাতুন (১২) নামের এক ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। স্কুলছাত্রী রেবা সদর উপজেলার উত্তর সমশপুর গ্রামের সাগর হোসেনের মেয়ে এবং ওই স্কুলের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। এ ঘটনায় ফারজানা ও আসমাসহ আরও ৬ জন ছাত্রী ট্যাবলেট খাওয়ার পর অসুস্থ হয়ে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইউসুফ আলী জানান, স্কুলের ছাত্রীরা অন্যান্য দিনের মতো সোমবার সকাল ১০টার দিকে স্কুলে আসে। দেশব্যাপী কৈশোরকালীন পুষ্টি নিশ্চিত করতে শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে সরবরাহ করা আইরন ফলিক অ্যাসিড ট্যাবলেট স্কুলের দুই শতাধিক ছাত্রীকে খাওয়ানো হয়।

এরপর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হঠাৎ করে রেবা খাতুনসহ ৩টি মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। সেখান থেকে তাদের উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক রেবাকে মৃত ঘোষণা করে। অন্যদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে দুপুরের পর আরও ৪ জন ছাত্রী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে বলে তিনি জানান।

হাটগোপালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান বিকাশ কুমার বিশ্বাস বলেন, ট্যাবলেট খাওয়ার পর প্রথমে ৩টা মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এরমধ্যে একটা মেয়ে মারা গেছে। ট্যাবলেট খেয়ে অন্তত ৬ জন ছাত্রী অসুস্থ হয়ে ঝিনাইদহ আড়াইশ বেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

রেবার বাবা সাগর হোসেন জানান, আমার মেয়ে সকালে বাড়ি থেকে ডিম আর মিষ্টিকুমড়ার তরকারি দিয়ে ভাত খেয়ে স্কুলে গিয়েছিল। তার মেয়ের অন্য কোনো রোগ ছিল না। তারপরও কেন তার মেয়ে মারা গেল সেই বিষয়টি তদন্ত করার দাবি জানাই।

ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. দেবাশিষ জানান, আসলে মেয়েটির কীভাবে মৃত্যু ঘটেছে সেটি ময়নাতদন্তর পর জানা যাবে। তবে পরে যারা অসুস্থ হয়ে ভর্তি হয়েছে সেটি পেনিক অ্যাটাকজনিত কারণ বলে তিনি মন্তব্য করেন।

ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডা. শুভ্রা রাণী দেবনাথ বলেন, মৃত্যুর কারণ নির্ণয় করার জন্য সদর হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ আনায়ারুল ইসলামকে প্রধান করে ৩ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সদস্যদের আগামী ৩ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।

(একে/এএস/মার্চ ২৯, ২০২২)