শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর : দিনাজপুরে লিচুগাছগুলো এবার মুকুলে ভরে গেছে। তাই,মুকুলের সমারোহে লিচু বাগানগুলোতে গেলবারের চেয়ে বেড়ে গেছে মৌমাছিদের আনাগোনা লিচু বাগানগুলোতে। স্থানীয় উদ্যোক্তরাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মৌথামারিরা এসে ভীড় জমিয়েছে। এতে উদ্যোক্তা ও মৌখামারিরা এবার দেড় হাজার মেট্রিক টন মধু আহরণের পাশাপাশি মৌমাছির পরাগায়নের মাধ্যমে ৩০ ভাগ বেশি লিচু উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।

ধানের জেলা দিনাজপুরেলিচু বাগানগুলোতে সারিবদ্ধ মৌবাক্স শোভা পাচ্ছে। মৌমাছির গুণজন আর মৌখামারিদের কর্ম ব্যবস্ততায় এখন মুখরিত লিচুবাগানগুলো। মৌমাছি লিচু মুকুলের মধু নিপূণভারে আহরণের পর বাক্সে ফিরছে। বাক্সে মধু জমা রেখে আবারো মধু আহরণে ছুটছে।

সিরাজগঞ্জ থেকে দিনাজপুরের লিচু বাগানে মৌখামার বসিয়েছেন, মৌখামারি চাস মিয়া ও তার দুই ছেলে আরমান সরকার এবং ইমাম সরকারসহ তাদের দল। দেশের সবচেয়ে বড় মৌখামারি চান মিয়া জানালেন, তারা এবার ৪টি স্থানে ৮ শতাধিক মৌবাক্স বসিয়েছেন, মধু সংগ্রহের জন্যে। ইতিমধ্যে একশত পঞ্চাশ মেট্রিক টন মধু সংগ্রহ করেছেন। আরো আড়াই থেকে তিনশত মেট্রিক টন মধু আহরণের সম্ভাবনা রয়েছে তাদের।

শুধু চান মিয়া নয়, কর্মব্যস্ত উদ্যোত্তা ও মৌখামারিরা ইতোমধ্যে প্রচুর মধু উৎপাদন করেছেন।বাকি সময়ে আরো দ্বিগুন মধু আহরণের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।

দেশের সর্ব বুহত্তর নিচু উৎপাদনের এলাকা বিরল উপজেলাতেই এবার প্রায়শতাধিক মৌখামারি ও উদ্যোক্তা মধু আহরণে নেমেছেন। তারা বেশির ভাগই এসেছেন, দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে। দেশের অন্যতম দক্ষ মৌখামারি চান মিয়াও অবস্থান করছেন, বিরলের মাধরবাটি’তে। জেলার ১৩টি উপজেলার লিচু বাগানগুলোতে এবার প্রায় ৭ শতাধিক মৌখামারি মধু আহরণে কাজ করছেন।

পুষ্টি নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিও জন্য মধু এবং মৌচাষে অভিঞ্জতা অর্জনে দিনাজপুরের লিচু বাগানগুলোতে বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউটের নতুন উদ্যোক্তারাও কাজ করছেন। এতে কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে অনেকের।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক প্রদীপ কুমার গুহ জানিয়েছেন,এ বছর জেলায় সাড়ে ৫হাজার বাগানের ৭ হাজার ৫’শ ৫২ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ হচ্ছে। এবার লিচুর ফলনের লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৪০ হাজার ৭’শ ১২ মেট্রিক টন। মাদ্রাজি, বেদেনা-বোম্বাই-চায়না থ্রি, কাঠালিসহ বিভিন্ন জাতের লিচু উৎপাদন হয় এ জেলায়। বেদেনা লিচু দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি হয়। এইসু-স্বাদু লিচু’র খ্যাতি রয়েছে বিশ্বজুড়ে।বাগানে মধু আহরণে মৌমাছির পরাগায়নের মাধ্যমে লিচু ফলন আরো ৩০ ভাগ বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।

লিচু বাগানে মধু উৎপাদনে মৌখামারি ও লিচু বাগান মালিকদের নিয়মিত পরামর্শ ও সহায়তা দিচ্ছে,কৃষি বিভাগ।
এবার জেলায় প্রায় ৩০ কোটি টাকা মূল্যের দেড় হাজার মেট্রিক টন মধু উৎপাদনের আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

(এস/এসপি/এপ্রিল ০১, ২০২২)