বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে দায়িত্বরত অবস্থায় এক শিক্ষিকাকে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত রামপাল উপজেলার পেড়িখালী ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা রফিকুল ইসলাম বাবুলের বিরুদ্ধে আইন মোতাবেক কঠোর ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

এই সাথে রামপাল থানায় দায়েরকৃত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে অব্যাহতি দিয়ে নতুন তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করারও নির্দেশ দিয়েছে ইসি। স্থানীয় সরকার বিভাগ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিবদের এনির্দেশনার চিঠি দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) উপ-সচিব মু. আবদুল অদুদ।

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ওই চিঠির অনুলিপি মহাপুলিশ পরিদর্শক, বাগেরহাট জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, খুলনার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, রামপাল উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রামপাল থানার থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে পাঠানো হয়েছে।

২০১৪ সালের ১৪ জুন দুপুরে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কার্যক্রমে তথ্য সংগ্রহকালে রামপাল উপজেলার বড় কাটলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা বেগম খাদিজা ইয়াসমিন ও তার স্বামী মোঃ রবিউল আলম খোকনকে পেড়িখালী ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বাবুল মারধর করেন। যা সে সময় বাংলাদেশ প্রতিদিনসহ বিভিন্ন জাতীয় প্রকাশিত হয়। বিষয়টি সম্পর্কে সংবাদপত্র ও ভোটার তথ্য সংগ্রহকারী স্কুল শিক্ষিকার মাধ্যমে জেনে নির্বাচন কমিশন এই নির্দেশ দিয়েছেন।

এ ঘটনায় তথ্য সংগ্রহকারী বেগম খাদিজা ইয়াসমিনের স্বামী মোঃ রবিউল আলম অভিযোগ করলে গত ১০ জুলাই রামপাল উপজেলার সংশ্লিষ্ট থানায় মামলাটি রেকর্ড করে।

এবিষয়ে তথ্য সংগ্রহকারী শিক্ষিকার স্বামী মোঃ রবিউল আলম খোকন শনিবার সকালে মোবাইলে এ প্রতিবেদককে জানান, পেড়িখালী ইউপি চেয়্যারম্যান রফিকুল ইসলাম বাবুল স্থানীয় মজীদ মীর নামের এক ভোটারের স্থান পরিবর্তনের জন্য ভোটার তালিকা হালনাগাদ কাজে নিয়োজিত শিক্ষিকা তার স্ত্রী খাদিজাকে নির্দেশ দেয়। এ বিয়য়ে ওই শিক্ষিকা চেয়ারম্যানকে তার সীমাবদ্ধতার কথা উল্লে¬খ করে ভোটার তালিকায় নাম স্থানান্তর করার ক্ষমতা নির্বাচন অফিসের জানিয়ে তাকে নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করার অনুরোধ করলে চেয়ারম্যান ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এরপর গত ১৪ জুন দুপুরে চেয়ারম্যান খোকনের দোকানে ঢুকে খাদিজাকে কিল ঘুষি ও লাথি শুরু করে। এক পর্যায়ে স্ত্রীকে বাঁচাতে তিনি এগিয়ে গেলে তাকেও চেয়ারম্যান বেধড়ক মারপিট শুরু করে। এ সময় শিক্ষিকা খাদিজা ইয়াসমিন দৌড়ে পাশ্ববর্তী রেজাউলের বাড়িতে গেলে সেখানে ঢুকে চেয়্যারম্যান পূনরায় মারপিট করে। পরে স্থানীয়রা তাদের গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।

এবিষয়ে রামপাল থানান ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি) আবু দাউদ খান জানান, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তনের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনার কথা তিনি শুনেছেন। তবে পুলিশ সুপারের মাধ্যমে লিখিত কপি পেলে তিনি ব্যবস্থা নেবেন।

বাগেরহাটের পুলিশ সুপার নিজামুল হক মোল্যা জানান, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশের বিষয়টি তিনি শুনেছেন। এবিষয়ে দাপ্তরিক কপি পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(একে/এটিআর/সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১৪)