এটিএম রাশেদুল ইসলাম, বগুড়া : বগুড়ার ধুনট উপজেলায় বিষপানের তিনদিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন লিপি খাতুন। পরিবারের অভিযোগ স্থানীয় এক ব্যক্তির ধর্ষণচেষ্টার শিকার হয়ে লিপি আত্মহত্যা করেছেন এবং এর আগে চারবছর যাবৎ একই ব্যক্তির দ্বারা  উত্ত্যক্তের শিকার হয়েছিলেন।

জানা যায়, লিপি খাতুন ধুনট উপজেলার চৌকিবাড়ি ইউনিয়নের কৈগাঁতী গ্রামের ফজলুল হকের কন্যা। এ বছর জালশুকা হাবিবুর রহমান ডিগ্রি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পান লিপি। গত মঙ্গলবার সকালে নিজ বাড়িতে বিষপান করেন তিনি এবং বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) রাত ১২টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় তাঁর বাবা ফজলুল হক বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে একই এলাকার রুদ্রবাড়িয়া গ্রামের বাবুল মিয়া (৪০) সহ ৬ জনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন।

লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় চার বছর যাবৎ লিপি খাতুনকে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন বাবুল মিয়া। এ বিষয়ে গ্রামের মাতব্বরদের কাছে বিচার চেয়েছিলেন ফজলুল হক। কিন্তু মাতব্বররা এ ঘটনার কোনো সুরাহা করতে পারেননি। অন্যদিকে বিচার চাওয়ায় ক্ষুব্ধ হন বাবুল মিয়া। একপর্যায়ে গত মঙ্গলবার সকাল নয়টার দিকে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে লিপির ঘরে প্রবেশ করেন বাবুল ও তাঁর সহযোগী একই এলাকার রফিকুল ইসলাম এবং অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে লিপিকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন বাবুল মিয়া।

লিপির চিৎকার শুনে আশেপাশের লোকজন ছুটে এলে বাবুল ও রফিকুল পালিয়ে যান। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে জানাজানি হলে ঘণ্টাখানেক পর লিপি বিষপান করেন। স্বজনেরা তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সেখানে লিপির অবস্থার অবনতি ঘটলে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে এবং পরে বুধবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে লিপির মৃত্যু হয়।

লিপির বাবা ফজলুল হক জানান, ‘আমার মেয়েকে আমি বাবুলের হাত থেকে বাঁচাইতে পারলাম না। আর কারও মেয়েকে যেন এভাবে জীবন দিতে না হয়। বাবুলসহ ঘটনায় জড়িত সবার বিচার চাই।’

ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা জানান, লিপি খাতুন নামের ওই শিক্ষার্থীকে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ বৃহস্পতিবার রাতে মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

(এআর/এসপি/এপ্রিল ১৬, ২০২২)