উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ ডেস্ক : সিলেটের মুকুন্দপুর থেকে আজমপুরগামী পাকবাহিনীর এক কোম্পানি সৈন্যকে মুক্তিযোদ্ধারা কুমিল্লার নরসিঙ্গার নামক স্থানে এ্যামবুশ করে। এই অ্যামবুশে হানাদার বাহিনীর ৬৩ জন সৈন্য নিহত হয়।

মুক্তিযোদ্ধারা কুমিল্লার মীরগঞ্জে পাকবাহিনীর ওপর তীব্র আক্রমণ চালায়। মুক্তিযোদ্ধাদের গোলার মুখে পাকসেনারা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে অস্ত্রশস্ত্র ফেলে দিয়ে প্রাণপণে পালায়। তাদের কয়েকজন হতাহত হয়। মুক্তিযোদ্ধারা এ যুদ্ধে প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করে।

গোপালগঞ্জের মানিকহার গ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের ঘাঁটি পাকবাহিনী চারদিক থেকে ঘেরাও করে ফেলে এবং হামলা চালায়। প্রচন্ড যুদ্ধের পর মুক্তিযোদ্ধারা তাদের ঘাঁটি ত্যাগ করে নিরাপদ আশ্রয়ে পিছিয়ে এসে নতুনভাবে প্রতিরক্ষা বু্হ্য রচনা করে।

চট্টগ্রামের শুভপুর সেতুর দুপাড়ে মুক্তিবাহিনী ও পাকবাহিনীর মধ্যে তীব্র মুখোমুখি যুদ্ধ হয়।

প্রচন্ড যুদ্ধের পর হাতিয়া পাকবাহিনীর দখলে চলে যায়। তারপর স্থানীয় দালালদের সহযোগিতায় তারা ব্যাপক হত্যাকান্ড চালায়।

সিনেটর এডওয়ার্ড কেনেডি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে বলেন, আমাদের সরকারের একাংশ নিরপেক্ষতার দোহাই দিয়ে বলেছেন, পূর্ব পাকিস্তানের ব্যাপারে আমাদের জড়িত হওয়া উচিত নয়। কিন্তু আমরা সেখানে জড়িয়ে পড়েছি। সেখানে সহিংসতার কাজে আমাদের দেয়া অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহৃত হচ্ছে। আমি মনে করি, পূর্ব পাকিস্তানের বর্তমান রাজনৈতিক ও মানবিক সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব মুখ্যত পাকিস্তানের। এ পরিস্থিতির উত্তরণে আমি আমাদের সরকার, পাকিস্তান নেতৃবৃন্দ ও বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রতি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য আবেদন জানাচ্ছি। একই সাথে শরণার্থীদের সাহায্য করার জন্য ভারত সরকার বিশ্বের প্রতি যে আবেদন জানিয়েছেন, তাতে সারা দেয়ারও অনুরোধ করছি। আমি মনে করি না, পূর্ব পাকিস্তানের বর্তমান সমস্যা অবজ্ঞা করার মতো একটি বিষয়। এ ব্যাপারে অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্র সরকারের করণীয় আছে। নিরপরাধ লক্ষ লক্ষ আর্তমানবের জীবন রক্ষার দায়িত্ব এ বিশ্বের প্রতিটি সরকারেরই এবং মানবজাতির স্বার্থে তা পালন করতেই হবে।

পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রধান নুরুল আমিন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সাথে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাতে নুরুল আমিন প্রেসিডেন্টকে পূর্ব পাকিস্তানের সামরিক তৎপরতা বৃদ্ধি করার সবিনয় অনুরোধ জানান।

শান্তি কমিটি এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তাদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগের জন্য ২৫৭৭৬৫ ও ২৮৩২৬৬ এই ফোন নম্বর দুটি ব্যবহার করতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানায়।

ঢাকায় স্বাধীনতা-বিরোধীরা আরো তৎপর হয়ে ওঠে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় শান্তি কমিটির ২৫টি ইউনিয়ন শাখা গঠিত হয়।

তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর

(ওএস/এএস/মে ১১, ২০২২)