নিউজ ডেস্ক : অফিস কিংবা বাইরে সারাদিন কর্ম ব্যস্ততার পর যখন আপনি ঘরে ফিরেন, ফ্রেস হন এবং ক্লান্তিময় শরীরকে বিছানায় এলিয়ে দেন তখন মনে হয় আপনান ঘরই আপনার আপন ভুবন, আপন জগৎ। তাই সৌন্দর্যপ্রিয় মানুষ যেমন নিজেকে সাজাতে আগ্রহী, তেমনি ঘরের সৌন্দর্যও রাখতে চান অটুট। ব্যস্ততার ভিড়ে একটু অবসর না মিললেও রুচিকে তো আর বিসর্জন দেয়া চলে না। তাই রোজকার শান্তির পাশাপাশি ঈদ কিংবা পূজায় আপনার ঘরকে সাজিয়ে তুলন বিশেষ সাজে ।

ঘরের ফার্নিচার, রং, ফ্লোর, কিংবা সিলিং সবখানেই জৌলুস ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা। বাদ পড়ে না দরজা জানালার পর্দার বেলায়ও। ঘরের গোপনীয়তা রক্ষার সঙ্গে সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে জুড়ি নেই পর্দার। এছাড়া সূর্যের প্রখর রোদ, বাইরের ধুলাবালি, দূষিত বাতাস, শীতের সময় ঠান্ডা হাওয়াকে বাধা দিতে এবং পুরাতন জিনিসপত্র আড়াল করতে পর্দার ব্যবহার চলে।

শৌখিন গৃহিণীরা অন্দরের সাজ-সজ্জায় পর্দায় দিয়ে থাকেন বাহারি ডিজাইনের প্রাধান্য। আর পর্দার কাপড়েও আনেন বৈচিত্র্য। এতে যেমন প্রকাশ পায় রুচি আর সৃজনশীলতার, বাড়িও হয়ে উঠে আকর্ষণীয়।


পর্দার ধরন, রঙ, কাপড়ের প্রিন্ট, ডিজাইন, ঝোলানোর স্টাইল ইত্যাদিতে একদম অল্প খরচেও ঘর হতে পারে অসাধারণ সুন্দর। বাড়িতে পর্দার সৌন্দর্যে চমক আনতে হলে আপনাকে কিছু কলাকৌশল জেনে নেয়া প্রয়োজন।

এক্ষেত্রে ঘরের আয়তন যদি ছোট বা বর্গাকার হয় তবে শর্ট সাইজের পর্দা ব্যবহার করা উচিত। অন্যদিকে ঘরে আকার যদি লম্বাটে বা আয়তকার হয় তবে ফ্লোর পর্যন্ত লম্বা পর্দার প্রয়োজন হবে।

আলোর উৎস ও বাতাস সঞ্চালন পেতে হলে শর্ট পর্দাই ভাল। এ ছাড়া ঘরে কৃত্রিম আলোর ওপর জোর দিলে আর ঘরটি এয়ারকন্ডিশনড হলে লম্বা পর্দা ঘরকে আরও সুন্দর ও আকর্ষণীয় করে তুলবে।

গাঢ় রঙের রুমে পর্দা হবে লম্বা সাইজের, অন্যদিকে হালকা রঙের ঘরে দু’ধরনের পর্দাই ঝোলানো যায়। আবার বড় রুম ও ফার্নিচার দুটোর ক্ষেত্রেই পর্দা প্রথার কিছুটা পরিবর্তন আবশ্যক। ফার্নিচারের সঙ্গে পর্দার কালার ম্যাচিং হতে পারে। ফার্নিচার বেশিরভাগ সময়েই মেরুন বা কালচে রঙের হয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রে মেরুন রঙের পর্দার ওপর সাদা বা অফ হোয়াইট পেলমেট বা পর্দার সঙ্গে কাপড় জুড়ে দেয়া যেতে পারে।

ড্রয়িং, ডাইনিং সব জায়গাতেই রুমের সাইজ, ফার্নিচারের সাইজ, রং, দেয়াল ও আবহাওয়া বুঝে পর্দা ঝোলাতে হবে। শোবার ঘরের পর্দা বাছাইয়ের ক্ষেত্রে হালকা রঙ বেছে নেবেন। এতে ঘরে একটা স্নিগ্ধতার আভাস থাকে।


যেখানে পর্দা পাবেন
অনেকে রেডিমেড পর্দা কিনে নেন। তবে বেশির ভাগেরই পছন্দ কাপড় কিনে পর্দা বানানো। এলিফ্যান্ট রোডে বিভিন্ন পর্দার কাপড়ের দোকান রয়েছে। সেখান থেকে কিনে নিতে পারেন পছন্দ অনুযায়ী গজ হিসেবে। বিদেশি কাপড়ের মধ্যে চীনা জ্যাকেট, সিনথেটিক জ্যাকেট, নেট কাপড়, সেরেয়ারস কাপড় বেশি চলছে। আর দেশি কাপড়ের মধ্যে খাদি, সুতি চেক কাপড় বেশি চলে। চায়নিজ বিভিন্ন ধরনের কাপড় পাবেন গজপ্রতি ৫০০ থেকে ৭০০ টাকার মধ্যে। নেট কাপড়ের দাম পড়বে গজ প্রতি ৪৫০-৬০০ টাকা। সেরেয়ারস কাপড় গজ প্রতি ৪০০-৬০০ টাকা।

ইসলামপুরের পাইকারি কাপড়ের দোকান থেকেও কেনা যাবে পর্দার কাপড়। সেখানে কটন ছাড়াও পাওয়া যাবে দেশি কাপড়ের মধ্যে বাসিতা, বনিতা, সান কাপড় বেশি চলছে। বিদেশি কাপড়ের মধ্যে চায়নিজ সিলসিলা কাপড় বেশ চলে। দেশি কাপড় কেনা যাবে গজপ্রতি ৯০-১২০ টাকা, চায়নিজ সিলসিলা কাপড় গজপ্রতি ৩৮০-৫৩০ টাকা, চায়নিজ নেট গজপ্রতি ২২০-৩৮০ টাকা দরে।

এছাড়াও নিউমার্কেট, বসুন্ধরা সিটি, গুলশান-২, মৌচাক ও নবাবপুর মার্কেটে পাবেন হরেক রকম পর্দার কাপড়। আর রেডিমেড পর্দা কিনতে চাইলে চলে যেতে পারেন আড়ং, যাত্রা, পিরান, রং অথবা নিপুণে। সেখানে পাবেন নানা রকম সুতার কাজ, ব্লক প্রিন্ট আর টাইডাই করা পর্দা।

(ওএস/এএস/সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৪)