মো. আব্দুল কাইয়ুম, মৌলভীবাজার : বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মোক্তাদির বলেছেন, বর্তমানে যে সরকার ক্ষমতায় আছে, এদের লজ্জা শরম নেই। এরা মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে। অথচ এই গণতান্ত্রিক লেবাসধারীরা ঈদের পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশারফ হোসেন, মঈন খান, এহসানিল হক মিলন, জহির উদ্দিন স্বপনসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় আমাদের নেতাকর্মীদের বাসাবাড়ি দোকানপাঠ ব্যবসা কার্যালয়ে হামলা চালিয়েছে। এদের হায়া লজ্জা শরম নাই। এককান কাটা থাকলেও লোকজন আরেক কানে শুনে চলাফেরা করে। যখন কান দুইটা থাকে না, তখন হায়া লজ্জা শরম একেবারেই থাকে না। এদের কথাবার্তা শুনলে বুঝবেন এরা ডুবন্ত। মানুষ যখন পানির মধ্যে ডুবন্ত অবস্থায় থাকে, তখন স্বাভাবিক অবস্থা ভূলে মুহুর্তে ওই পারে যাওয়ার চেষ্টা করে। ঠিক তেমনি আওয়ামীলীগের নেতাদের কথাবার্তা দেখলে বুঝবেন এদের আর দম নাই। এদের এক্সেপেয়ার ডেইট চলে এসেছে। সুতরাং সময় বেশী নেই। যেহেতু সময় বেশি নাই, এদের কার্যকলাপও অসংযত।

শনিবার (১৪ মে) বিকেলে মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব মোড়ে সারাদেশে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচীর অংশ হিসেবে জেলা বিএনপি আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মোক্তাদিও এসব কথা বলেন।

জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সাংসদ এম নাসের রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন- কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি ফরহাদ চৌধুরী শামিম, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি সাবেক পৌর মেয়র ফয়জুল করিম ময়ূন, সহ সভাপতি ফয়ছল আহমদ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে খন্দকার আব্দুল মোক্তাদির আরো বলেন, আওয়ামীলীগ কথায় কথায় পাকিস্তানিদের গালি দেয়, অথচ এদের আচার আচরণ দেখলে মনেহয় ইয়াহিয়া খানের একেবারে সরাসরি বন্ধু। এদের প্রতিদিনকার কাজ রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে অপপ্রচার দুর্নীতির অভিযোগ করা। ইচ্ছামত রাস্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ করা, দেশপ্রেমের কথা বলা, নির্বাচন থেকে পালিয়ে বেড়ানো। জনগণের সেবার কথা বলা অথচ নির্বাচন থেকে তারা পালিয়ে বেড়ায়। মানুষের ওপর অত্যাচার করে, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে কোথাও কথা বলতে দেয় না। এসমস্ত আচরণ কার মধ্যে দেখেছি আমরা। ইতিহাস স্বাক্ষি এগুলো আইয়ূব খান ইয়াহিয়া খানের আচরণ ছিল। এরা মুখে পাকিস্তানকে গালি দেয়, কিন্তু সার্বক্ষণিক চব্বিশ ঘন্টা এদের আচার আচরণে পাকিস্তানিদের অনুসরণ দেখবেন। এদের উন্নয়নের ফিরিস্তি শুনলে মনে হবে বাংলাদেশ আর বাংলাদেশ নাই। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ ইংল্যান্ড আমেরিকার পর্যায়ে চলে গেছে। মূলত এই করোনার পরে যতগুলো অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান আছে বাংলাদেশে, যাদের উপর মানুষের আস্তা আছে। তাদের জরিপে দেখা গেছে, দারিদ্রসীমার নিচে বাংলাদেশের জনসংখ্যা তিন কোটি। আঠারো কোটি মানুষের মধ্যে দারিদ্রসীমার নিচে যদি তিন কোটি থাকে, তাহলে এই দেশ দরিদ্র না ধনী। ধনী তারাই যারা এই সরকার ও তাদের চেলাচামান্ডারা, যারা হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছে। তারাই শুধু একমাত্র ধনী।

সভাপতির বক্তব্যে এম নাসের রহমান বলেন,আমাদের পাশ্ববর্তী শ্রীলঙ্কায় কি ঘটনা ঘটেছে আপনারা তা দেখছেন। সরকারের মন্ত্রী এমপিদের পুকুরের পানি আর নদীর পানিতে ঝাপিয়ে পরতে হয়েছে। মন্ত্রীদের কাপড় খুলার বিষয়তো সবাই দেখেছেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী কল্পনাও করে নাই সে এভাবে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে যাবে। ঠিক তেমনি আওয়ামীলীগেরও দিন শেষ হয়ে আসছে। কখন যে জনগণ ফুঁসে উঠবে টেরই পাবে না।

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন- জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মো. বদরুল আলম, মো. হেলু মিয়া, প্রথম যুগ্ম সম্পাদক মো. ফখরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক বকসি মিছবাউর রহমান, সহ সম্পাদক আব্দুর রহিম রিপন, প্রচার সম্পাদক মো. ইদ্রিস আলী, জেলা কৃষকদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শামীম আহমদ, জেলা তাঁতীদলের আহ্বায়ক আতাউর রহমান চৌধুরী, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান নিজাম, যুগ্ম সম্পাদক শামিম জাফর, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউর রহমান, পৌর বিএনপির সভাপতি অলিউর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ রশীদ, যুগ্ম সম্পাদক সরোয়ার মজুমদার ইমন, কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেন উজ্জল, জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের সাধারণ সম্পাদক জিএম মোক্তাদির রাজু, স্বেচ্ছাসেবকদলের কেন্দ্রীয় সদস্য ইছহাক চৌধুরী মামনুন, জেলা যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি আক্তার হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম পিরুন, জেলা জাসাসের সদস্য সচিব জসিম উদ্দিন, সদর উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক হাফিজ আহমেদ মাহফুজ, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আমীর মোহাম্মদ, পৌর যুবদলের আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমান শিপন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক শিবলুর রহমান, জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মহসিন আহমদ, সাধারণ সম্পাদক আকিদুর রহমান সোহান, যুগ্ম সম্পাদক মাজেদুল আলম চৌধুরী শাহান, হাসান আহমদ চৌধুরী ঝুমা, পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক ইহাম মোজাহিদ, শ্রীমঙ্গল উপজেলা বিএনপির সভাপতি নুরে আলম সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক তাজ উদ্দিন তাজু, কুলাউড়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি জয়নাল আবেদিন বাচ্চু, সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সজল, রাজনগর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্বাস উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক চৌধুরী, জুড়ী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান আফসর, কমলগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আনোয়ার হোসেন বাবু, সাবেক চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান, আবুল হোসেন প্রমুখ।

(একে/এএস/মে ১৪, ২০২২)