রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : অবশেষে সাতক্ষীরা শহরের প্রাণ সায়ের খালের বড়বাজারে চরভরাটি জায়গা দখল করে নির্মাণ করা জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহবায়ক শফিকুল ইসলাম খান বাবু’র অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ, নির্মাণ সামগ্রী অপসারন ও সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে ফুড অফিস মোড়ের মহিউদ্দিন ও সালাউদ্দিনের নির্মাণাধীন অবৈধ দোকান ঘর শনিবার বিকেলে ভেঙে দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা তুজ জোহরা। 

সাতক্ষীরা শহরের সচেতন মহল জানান, প্রাণ সায়র খনন সম্পন্ন হতে না হতেই আবারো অবৈধ দখল নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে দখলদার চক্র। গতবছর প্রায় ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে খালটির খনন কাজ শুরু হয়। এর ফলে গতবছর খালটি অবৈধ দখল ও দুষণ মুক্ত করতে মাঠে নামে প্রশাসন। উচ্ছেদ করে দেওয়া হয় অবৈধদখলদারদের। বড়বাজার সংলগ্ন মৎস্য ব্যবসায়ী শরিফুল ইসলাম খান বাবুর স্থাপনাটিও ভেঙে গুড়িয়ে দিয়ে প্রাণ সায়র খালের প্রাণ ফেরানোর চেষ্টা করা হয়।

খালটির নির্মাণ কাজ এখনো শেষ হয়নি। কিন্তু বছর ঘুরতে না ঘুরতেই শরিফুল ইসলাম খান বাবু সম্প্রতি জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের আহবায়কের পদ হাতিয়ে শহর জুড়ে পোষ্টার সাটিয়ে পুনরায় রাতের আঁধারে খালের জায়গা দখল করে কয়েকটি দোকান ঘর নির্মাণ কাজ শুরু করেন। অপরদিকে শহরের ফুড অফিস মোড়ের ডাঃ কোমরউদ্দিনের ছেলে মহিউদ্দিন ও সালাহউদ্দিন তার উকিল ভাই অ্যাড. সরাফউদ্দিনের পরামর্শে ঈদের ছুটিকে কাজে লাগিয়ে সরকারি বালিকা উচ্চ বির্দ্যালয়ের প্রধান ফটকের দক্ষিণ পাশে ব্রীজের নিকটে ঔষধের ঘর নির্মাণ করাজ শুরু করেন।

এ নিয়ে পত্রিকায় সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ফুড অফিস মোড়ে বাড়ি সংলগ্ন পৌরসভার জমিতে কিভাবে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করে সরাফউদ্দিন ভাড়া দিয়ে মাসে হাজার হাজার টাকা উপার্জন করছেন তা প্রতিবেদনে উঠে আসে। বিষয়টি নজরে আসে উপজেলা প্রশাসনের। এরই ধারাবাহিকতায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বাবু খানের স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ করে নির্মাণ সামগ্রী অপসারনের ব্যবস্থা করেন। ভেঙে দেওয়া হয় মহিউদ্দিন ও সালাহউদ্দিনের নির্মাণাধীন স্থাপনা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বড় বাজারের একাধিক মৎস্য ব্যবসায়ী জানান, মাছ ব্যবসায়ী বাবু খান কৌশলে স্বেচ্ছাসেবকলীগের আহবায়কের পদ পেয়ে নিজেকে অনেক বড় কিছু মনে করেন তিনি। কাউকে তোয়াক্কা করেন না।
এবিষয়ে শরিফুল ইসলাম খান বাবুর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, জেলা প্রমাসক আবুল কাশেম তার দোকান ঘর ভেঙে দিলে তিনি আদালতে যান। আদালত তার পক্ষে রায় দেওয়ায় তিনি নতুন করে ঘর নির্মাণ কাজ শুরু করেন।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাতেমা তুজ জোহরা বলেন, শনিবার নিজে দাড়িয়ে থেকে বাবু খানের কিছু অংশ ঢালাই ভেঙে দিয়েছেন। তবে বাবুখানের পক্ষে একটি রায় রয়েছে। ওই আদেশের বিরুদ্ধে সরকার উচ্চ আদালতে যাবে। এছাড়া গালর্স স্কুল মোড়ের একবারে রাস্তার ধারে নির্মিত মহিউদ্দিন ও সালাউদ্দিনের নির্মাণাধীন অবৈধ দোকান ভেঙে দেওয়া হয়েছে।

(আরকে/এসপি/মে ১৫, ২০২২)