আশজাদ রসুল সিরাজী, গাজীপুর : ‘বিএনপি বর্তমানে পচনশীল একটি দল। বিএনপির রাজপথের আন্দোলনের কথা শুনতে শুনতে ১৩ বছর পার হলো। তারা আর কোনো দিন ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না। ওরা এখন ফেসবুকে আন্দোলনপ্রিয় দল।’

আজ বৃহস্পতিবার (১৯ মে) গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলার মাটিতে ফিরে এসেছেন বলে অবরুদ্ধ গণতন্ত্র শৃঙ্খলমুক্ত হয়েছে। শেখ হাসিনা ফিরে এসেছেন বলে সমুদ্র বিজয়, আকাশ বিজয় হয়েছে। শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এসেছেন বলে যুদ্ধাপরাধীর বিচার হয়েছে। তিনি এসেছেন বলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকারীদের বিচার হয়েছে। শেখ হাসিনা এসেছেন বলে আজ পদ্মা সেতুর নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে।’

আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কৃষি মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক এমপি সকাল ১১টায় সম্মেলন উদ্বোধন করেন। গাজীপুর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আ.ক.ম মোজাম্মেল হক এমপি’র সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন সবুজ এমপি’র সঞ্চালনায় সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ মির্জা আজম এমপি, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাহিদ আহসান রাসেল এমপি, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মোঃ সিদ্দিকুর রহমান, সদস্য মোঃ আনোয়ার হোসেন, মোঃ সাহাবুদ্দিন ফরাজী, মোঃ ইকবাল হোসেন অপু এমপি, মোহাম্মদ সাইদ খোকন, সিমিন হোসেন রিমি এমপি, মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমতউল্লাহ খান, অধ্যাপিকা রুমানা আলী টুসি এমপি, জেলা পরিষদের প্রশাসক আখতারউজ্জামান, মহানগর আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আতাউল্লাহ মন্ডল প্রমুখ।

ওবায়দুল কাদের এমপি আরো বলেন, পদ্মা সেতুর এত ব্যয় নিয়ে ফখরুল সাহেব এত কথা বলেন। খরস্রোতা পদ্মা নদীতে ফেরি চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়। অ্যামাজানের মতো পদ্ম নদীর খরস্রোত আর কোন নদীতে নেই। এখন সাত মিনিটে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার পদ্মা সেতু পার হওয়া যাবে। আর ফেরিতে গেলে সময় লাগে দুই থেকে আড়াই ঘন্টা।

মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পর ছয় বছর নির্বাসনে ছিলেন দেশরত্ন শেখ হাসিনা এবং বঙ্গবন্ধুর আরেক কন্যা শেখ রেহানা। ছয় বছর পর আওয়ামীলীগ যখন কলহ কোন্দলে জর্জরিত তখন ঐকের প্রতিক হয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে সর্বসম্মতভাবে আওয়ামীলীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। ছয় বছর পর অনেক বাধা বিপত্তি, প্রতিবন্ধকতা ও প্রতিরোধের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা বাংলার মাটিতে পদার্পণ করেছিলেন। তিনি আগামি নির্বাচন ও জাতীয় সম্মেলনকে সামনে রেখে গাজীপুরের নেতৃবৃন্দকে অন্তকলহ বিরোধ মিটিয়ে ঐক্যবব্ধ হওয়ারর আহবান জানিয়ে বলেন এভাবেই আমরা বিজয়ের দ্বারপ্রান্ত পৌঁছাতে পারবো।

তিনি বলেন, পদ্মা সেতু হয়ে গেল মানুষ খুশি ফখরুল সাহেবের মন খারাপ। দেশের মানুষ ভাল আছে, ফখরুল সাহেবের মন খারাপ হয়ে যায়। মানুষ ভাল থাকলে বিএনপির সকলের মন খারাপ হয়ে যায়। বিশেষ করে বিএনপি নেতাদের। যাদের গত তের বছরের ইতিহাস আন্দোলন আর আন্দোলন দেখতে দেখতে তের বছর, আন্দোলন হবে কোন বছর। আন্দোলনে ব্যর্থ, নির্বাচনে ব্যর্থ, বিএনপি এখন পদ্মা সেতু দেখে গাত্রদাহ হচ্ছে। আজকে বিআরটি হয়ে যাচ্ছে, মেট্রোরেল হয়ে যাচ্ছে, কর্ণফুলি শেখ মুজিবুর রহমান টানেল হয়ে যাচ্ছে। সামনে ভোট বিএনপির মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। আওয়ামীলীগ বিরোধীদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। অকথ্য ভাষা, অপপ্রচার করছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সারা দুনিয়ায় পড়েছে। জিনিসপত্রের দাম, জ্বালানীর উপর আজকে সারা দুনিয়ায় প্রভাব পড়েছে। বাংলাদেশ কোন বিচ্ছিন্ন দ্বীপ নয়।

তিনি বলেন, গাজীপুরে যেসব উন্নয়ন কাজ অসমাপ্ত রয়েছে চলমান কাজ গুলো অচিরেই সমাপ্ত হবে। নতুন কোন কাজ থাকলে সে কাজে নেত্রীর নির্দেশ আছে গাজীপুরের প্রতি তার বিশেষ একটা টান আছে। তিনি বলেছেন কাজ শেষ করার জন্য। আর যেগুলো বাকি আছে সেগুলো আমরা অচিরেই শুরু করবো।

(এস/এসপি/মে ১৯, ২০২২)