সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার ১ নং কায়েমপুর ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউল হক ঝুনুর বিরুদ্ধে টিসিবি কার্ড, ফেয়ার প্রাইজের তালিকায় নাম, ভিজিডি, ভিজিএফ, বয়স্ক, বিধবা ও মাতৃত্বকালীন ভাতা বিতরনে সুবিধাভোগিদের নিকট থেকে নগদ অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। একই সাথে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে জন্মসনদ ও ওয়ারিশান সনদ প্রদানেও বাড়তি টাকা নেবার অভিযোগ করছেন অনেকে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে মৌখিক অভিযোগ দিলেও মিলছে না সমাধান।

কায়েমপুর ইউনিয়ন পরিষদ, ভুক্তভোগি জনসাধারন ও নগদ অর্থ প্রদানের মাধ্যমে সুবিধা গ্রহনকারিরা জানান, জিয়াউল হক ঝুনু স্বতন্ত্র প্রাথী হিসেবে গত ইউপি নির্বাচনে ১ নং কায়েমপুর ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। চেয়ারম্যান হিসেবে শপথ গ্রহনের পর থেকেই শুরু করেন নানা অনিয়ম। সরকারি নির্দেশনা অবমাননা করে বাড়িয়ে দেন জন্মসনদ ও ওয়ারিশান সনদ প্রদানের ফি। বর্তমানে জন্মসনদ বিতরনে প্রতিটিতে ২ শ ও ওয়ারিশান সনদ প্রতিটিতে ১শ টাকা আদায় করা হচ্ছে।

কেউ সরকারি বিধানের কথা বললে তাকে করা হচ্ছে হেনস্ত। গত ঈদ উল ফিতরের আগে অতিদরিদ্রদের জন্য প্রদান করা ১০ কেজি চাল বিতরনে করেছেন সীমাহিন অনিয়ম। ১০ কেজি চালের প্রতিটি স্লিপ দিতে আদায় করেছেন ১শ টাকা। এছাড়া টিসিবি কার্ড, ফেয়ার প্রাইজের নাম, বয়স্ক, বিধবা ও মাতৃত্বকালিন ভাতার সুবিধাভোগি নির্ধারনে ইউপি সদস্যদের মাধ্যমে আদায় করা হচ্ছে নগদ টাকা। প্রতিজন সুবিধাভোগির নিকট থেকে নেয়া হচ্ছে ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে বাদ দেয়া হচ্ছে তার নাম।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী জানান, মেম্বারের মাধ্যমে আমার নিকট থেকে ৬ হাজার টাকা নিয়েছে চেয়ারম্যান। বলেছে আমাকে বয়স্কভাতার কার্ড করে দিবে। কিন্তু টাকা দিয়েও আমার কার্ড পাচ্ছি না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি ও কায়েমপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জানান, ১০ টাকা কেজি চালের সুবিধাভোগি ও ১০ কেজি চালের স্লিপ বিতরনেও নগদ অর্থ আদায় করছে চেয়ারম্যান। তার পরিষদে টাকা ছাড়া কোন সুবিধাই মিলছে না। একাজে তাকে সহযোগিতা করছে বেশ কজন ইউপি সদস্য। কায়েমপুর ইউনিয়ন পরিষদকে অনিয়মের স্বর্গরাজ্যে পরিনত করেছে ঝুনু চেয়ারম্যান।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ইউপি সদস্য জানান, বয়স্কভাতা, বিধবা ভাতা, মাতৃত্বকালিন ভাতা ও কর্মসৃজন প্রকল্পে নাম দিতে প্রতিটি নামের জন্য ৫ হাজার করে টাকা দিতে ইউপি সদস্যদের বলে দিয়েছেন চেয়ারম্যান। এর চেয়ে এক টাকা কম হলেও কারো নাম দেয়া যাবে না। এরকম দুর্নীতি গ্রস্থ চেয়ারম্যান এর সাথে নির্বাচিত হয়ে জনগনের জন্য কোন কাজই করা যাচ্ছে না। চেয়ারম্যানের জন্য টাকা চেয়ে আমরা জনগনের কাছে ধিকৃত হচ্ছি।

তবে সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন কায়েমপুর ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউল হক ঝুনু। অর্থের বিনিময়ে সুবিধা প্রদান করার প্রমান রয়েছে জানালে মোবাইল ফোন কেটে দেন তিনি।

এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহ মো: শামসুজ্জোহা বলেন, কায়েমপুর ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ এসেছে মৌখিকভাবে, তাকে সতর্ক করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেয়া হবে।

(এস/এসপি/মে ২১, ২০২২)