রাজন্য রুহানি, জামালপুর : জামালপুরের কৃতি সন্তান বীর প্রতীক সৈয়দ সদরুজ্জামান হেলাল আর নেই (ইন্নালিল্লাহী ওয়া ইন্না এলাইহি রাজিউন)।

তিনি রবিবার সকাল ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে জামালপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়ে, আত্মীয়স্বজনসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

রবিবার বাদ আসর জামালপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তার প্রথম জানাযা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সম্মান প্রদর্শন করা হয়। এর আগে বীরমুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ সদরুজ্জামান হেলালের মরদেহে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন, জামালপুর প্রেসক্লাবসহ ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান। সোমবার মেলান্দহ উপজেলার দুরমুটে দ্বিতীয় জানাযা নামাজ শেষে পারিবারিক কবর স্থানে তাকে দাফন করা হবে।

তিনি একাত্তরের রণাঙ্গনের অকুতোভয় যোদ্ধা জামালপুরের কৃতি সন্তান বীরমুক্তিযোদ্ধা সদরুজ্জামান হেলাল (বীর প্রতীক)। তাঁর মৃত্যুতে জাতি একজন গর্বিত সূর্য সন্তানকে হারাল। মহান মুক্তিযুদ্ধে অসীম সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য সরকার তাঁকে বীর প্রতীক উপাধীতে ভূষিত করেছিলেন। এই বীর প্রতীক দেশমাতৃকার মুক্তিসংগ্রামে তাঁর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

এদিকে বীরমুক্তিযোদ্ধা সদরুজ্জামান হেলাল বীর প্রতীকের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি, জামালপুর সদর আসনের সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মো. মোজাফ্ফর হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. সুরুজ্জামান, জামালপুর পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন ছানু, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ্ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবুল হোসেনসহ আরও অনেকেই।

উল্লেখ্য, বীরমুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ সদরুজ্জামান হেলাল (বীর প্রতীক) ৩১ জানুয়ারি ১৯৫০ সালে জামালপুর জেলার মেলান্দহ উপজেলার দুরমুট (সাহেব বাড়ি) গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম সৈয়দ বদরুজ্জামান এবং মায়ের নাম সৈয়দা খোদেজা জামান।

১৯৭১ সালে মা-বাবার অনুমতি নিয়ে তিনি মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। ভারতে প্রশিক্ষণ শেষে ১১ নম্বর সেক্টরের মহেন্দ্রগঞ্জ সাব সেক্টরের একটি কোম্পানির অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। কামালপুরসহ আরও কয়েক স্থানের যুদ্ধে অংশ নেন। তিনি ও তাঁর দলের মুক্তিযোদ্ধারা সাহস ও বীরত্ব প্রদর্শনের মাধ্যমে যুদ্ধ করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধে তাঁর সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাঁকে বীর প্রতীক খেতাব প্রদান করেন।

(আরআর/এএস/মে ২৩, ২০২২)