তুষার কান্তি বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ : শিক্ষার্থীর চোখ পারীক্ষা করবেন শিক্ষক । ভিশনের মধ্যমে শিক্ষার্থীর চোখের দৃষ্টিশক্তি পরীক্ষা করে শিক্ষক চোখের সমস্য নিরূপন করবেন। তারপর তাকে পাঠানো হবে হাসপাতালে। সেখান থেকে চিকিৎসা নিয়ে শিক্ষার্থী তার চোখ সুরক্ষিত রাখবে। চোখের রোগ নিয়ে আর কোন শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবন ব্যাহত হবে না। সারা দেশে এটিকে মডেল হিসেবে ছড়িয়ে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে গোপালগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসাপাতাল ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান।

এ উদ্দেশ্য সফল করতে আজ সোমবার দিনব্যাপী হাসাপাতালের হলরুমে স্কুল সাইট টেস্টিং প্রোগ্রামের আওতায় শিক্ষক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকালে এ প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করে আয়োজক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক প্রফেসর ডা. নাহিদ ফেরদৌসী।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মোঃ আবুল কালাম আজাদ, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আনন্দ কিশোর সাহা, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম হেদায়েতুল ইসলাম, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহসিন উদ্দিন সহ আরো অনেকে বক্তব্য রাখেন।

প্রশিক্ষণে গোপালগঞ্জ ও টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার ৩৮ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৭৬ জন শিক্ষক অংশ নেন। পরে শিক্ষকদের হাতে সনদপত্র তুলে দেয়া হয়।

প্রশিক্ষনার্থী গোপালগঞ্জ শহরের এসএম মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুরাইয়া খানম বলেন, আমি দীর্ঘ ৪০ বছর শিক্ষকতা করছি। এরমধ্যে এমন প্রশিক্ষণ কখনো পাইনি। এটি একটি মূল্যবান প্রশিক্ষণ। এ প্রশিক্ষণ গ্রহন করে আমি ভিশনের মাধ্যমে শিশুদের চোখের দৃষ্টিশক্তি পরীক্ষা করতে পারব। তাদের চোখে কোন সমস্যা থাকলে এটির মাধ্যমে চিহ্নিত করব। পরে তাদের চিকিৎসার জন্য চক্ষু হাসপাতালে পাঠাব। এখন থেকে চিকিৎসা নিয়ে তারা চোখের রোগ থেকে আরোগ্য পাবে। এর ফলে শিশুদের চোখের রোগ জনিত কারণে শিক্ষা ব্যাহত হবে না।

শহরের যুগশিখা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হরি শংকর বিশ্বাস বলেন, চমৎকার একটি বিষয় নিয়ে চক্ষু হাসপাতাল আমাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে। প্রশিক্ষণ লভ্য জ্ঞানের মাধ্যমে আমরাই স্কুলের ছেলে-মেয়েদের চোখের সমস্যা নিরূপন করতে পারব। এতে আমাদের শিক্ষার্থীরা সহজেই চক্ষু সুরক্ষা করে পড়াশোনা ভালভাবে চালিয়ে যেতে পাবরে। এক দিনের এ প্রশিক্ষণ অনেক গুরুত্ব বহন করছে। আগে চোখের সমস্য নিয়ে ২/১ জন শিক্ষার্থী লেখাপড়া করতে পারেনি। এখন আর এ সমস্যা থাকবে না।

গোপালগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসাপাতাল ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের পরিচালক প্রফেসর ডা. নাহিদ ফেরদৌসী বলেন, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আমরা শিক্ষকদের দেখিয়ে দিয়েছি কিভাবে দৃষ্টিশক্তি পরীক্ষা করতে হয়। শিক্ষার্থীরা বেশিরভাগ সময় শিক্ষকের টার্চে থাকেন। তাই এ জ্ঞান কাজে লাগিয়ে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীর চোখের সব ধরণের রোগ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখতে পারবেন। এছাড়া সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের চশমা প্রদান করা হবে। এ হাসপাতাল থেকে শিক্ষার্থীর চোখের সব ধরনের চিকিৎসা ও অপারেশ করে দেয়া হবে। এই কার্যক্রম আমরা মডেল হিসেবে সাড়া দেশে ছড়িয়ে দিতে চাই। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের দৃষ্টিশক্তি সুরক্ষার পাশাপাশি লেখাপড়া কখনোই ব্যাহত হবে না ।

(টিকেবি/এসপি/মে ২৩, ২০২২)