স্টাফ রিপোর্টার : রাজনৈতিক দলগুলো কারিগরি টিম পাঠিয়ে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) যাচাই-বাছাই করতে পারবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। এছাড়া ইভিএম নিয়ে কমিশন কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছায়নি বলেও জানান তিনি।

সিইসি বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে ইভিএমে ভোট করবো, নাকি ১০০ আসনে করবো, নাকি মোটেই করবো না- এগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সব বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে যে নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে কি হবে না।

বুধবার (২৫ মে) কারিগরি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠকের পর এসব কথা বলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, একজন টেকটিক্যাল ব্যক্তি পারবেন মেশিন নিয়ে মূল্যায়ন করতে। আমরা সেই দৃষ্টিকোণ থেকে কারিগরি বিশেষজ্ঞদের (টেকনিক্যাল পারসন) ডেকেছি। রাজনৈতিক দলগুলোকেও আমরা অনুরোধ করবো তাদের যে কারিগরি টিম আছে কিংবা যদি থাকে তাদের যাচাই করার জন্য।

সিইসি বলেন, বিষয়টা শতভাগ আপেক্ষিক। আমরা যেটা বলতে চাচ্ছি, আমরা কিন্তু কারও মতামতকে উপেক্ষা করিনি। বিরোধী দল থেকে যে মতামত এসেছে- আমরা তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেইনি। আমরা অনেকগুলো বৈঠক করেছি। আজও বিশিষ্টজনদের সঙ্গে বসেছি। যারা প্রযুক্তিবিদ তাদের সঙ্গে বসেছি। এই মেশিনের (ইভিএম) ব্যাপারে উনাদের বক্তব্যের পরে কোনো কিছু বলতে চাচ্ছি না। আমি শুধু বলতে চাচ্ছি এই মেশিনের বিষয়ে আরও কয়েকটা মিটিং করবো। রাজনৈতিক দলগুলোকেও ডাকা হবে।

তিনি বলেন, ইভিএম নিয়ে প্রযুক্তিবিদরা বলেছেন প্রভাবিত করার সুযোগ নেই। আমার কিন্তু আস্থা রাখতে হবে ওইসব মানুষের ওপর, যারা এই জিনিসগুলো বোঝেন, যারা প্রোডাক্টগুলো তৈরি করেছেন তাদের ওপর। প্রযুক্তিবিদরা আশ্বস্ত হয়েছেন। আমরা আরও কয়েকটি বড় বৈঠক করবো। রাজনৈতিক দল যেহেতু বাইরে মাঠে বলছেন এটা মন্দ মেশিন, ভালো মেশিন না। আমরা লিখিতভাবে জানতে চাইবো আপনারা কী কী সমস্যা পাচ্ছেন? আমাদের লিখিতভাবে অবগত করুন। আমরা যেন সিস্টেমেটিক্যালি অ্যাড্রেস করার সুযোগ পাই। আমরা যথেষ্ট চেষ্টা করবো। আমাদের হয়তো লিমিটেশন আছে, কিন্তু চেষ্টার কোনো ত্রুটি থাকবে না। যদি সবার আস্থা অর্জন করতে পারি। মেশিনের ভালো-খারাপ নিয়ে কিছু বলবো না, আপনাদের আর একটু অপেক্ষা করতে হবে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ইভিএম মেশিন নিয়ে আমরা কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাইনি। এগুলো যখন পরীক্ষা-নিরীক্ষা হবে, একটা সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় হবে, তখন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

সকাল ১০টা থেকে প্রায় চার ঘণ্টা অনুষ্ঠিত বৈঠকে অন্যদের মধ্যে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবিব খান, বেগম রাশেদা সুলতানা, মো. আলমগীর, মো. আনিছুর রহমান, শিক্ষাবিদ ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম কায়কোবাদ, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মতিন সাদ আবদুল্লাহ, ড. মো. মাহফুজুল ইসলাম, বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির (বিএমটিএফ) পরিচালক মেজর জেনারেল সুলতানুজ্জামান মো. সালেহ উদ্দিন, সেনা কল্যাণ সংস্থার চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলামসহ ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বৈঠকে ইভিএম নিয়ে বিশেজ্ঞদের ধারণা দেওয়া হয়। তারাও পর্যবেক্ষণের পর নিজেদের মতামত তুলে ধরেন।

(ওএস/এসপি/মে ২৫, ২০২২)