রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরার তালা উপজেলার খলিলনগর ইউনিয়নের মাছিয়াড়া গ্রামে আম চুরির প্রতিবাদ করাকে কেন্দ্র করে এক ব্যবসায়ির রান্না ঘর, কাঠঘর ও গোয়ালঘরে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় তিন দিনেও মামলা নেয়নি পুলিশ। ফলে নির্যাতত ওই ব্যবসায়ি পরিবারের সদস্যরা রয়েছেন হুমকিতে।

মাছিয়াড়া গ্রামের ব্যবসায়ি সুমন ঘোষ জানান, তাদের গ্রামের কালিকৃষ্ণ ঘোষের ছেলে সুখেন্দু ঘোষের কাছ থেকে ২০২০ সালের ৮ অক্টোবর ২০৯৫ দাগের ২০ শতক বাস্তু জমি কেনেন। ওই জমিতে মাটি ভরাট করে তিন দিকে সীমানা প্রাচীর দিয়ে গাছগাছালি লাগিয়ে নামপত্তন ও খাজনা দিয়ে তিনি শান্তিপূর্ণ ভোগদখলে রয়েছেন। কালিকৃষ্ণ ঘোষ ২০৯৫ দাগের সাড়ে ১৯ শতক জমিসহ আরো কয়েকটি দাগের জমি বায়নাপত্র করে দিলেও দলিল করে না দেওয়ায় রামকৃষ্ণ ঘোষ ওই জমি ১৯৮৮ সালে আদালতের মাধ্যমে লিখে নেন।

রামকৃষ্ণ ঘোষ মারা যাওয়ার পর তার দুই ছেলে বাসুদেব ঘোষ ও শ্যাম সুন্দর ঘোষ ২০৯৫ দাগে ৫ শতক জমি রেকর্ড পেয়ে তার(সুমন) জমির মধ্য থেকে সাড়ে সাত শতক জমি সাত মাস আগে দাবি করা শুরু করে। একপর্যায়ে তিনি ওই জমির এক পাশে বাকি থাকা সীমানা পিলার বসিয়ে ঘেরা দিতে গেলে বাসুদেব ও শ্যামসুন্দর বাধা দেয়। এ ঘটনায় তিনি থানায় সাধারণ ডায়েরী করেন। এ নিয়ে থানায় বসাবসি করে সিদ্ধান্ত না হলেও উপজেলা চেয়ারম্যান ঘোষ সনৎ কুমার বিষয়টি নিয়ে বসাবসি করেন। দলিলের নকশা অনুযায়ি তিনি (সুমন) জমি ভোগ করছেন কিনা তা জানতে দাতা সুখেন্দু ঘোষকে ডাকার কথা হলে প্রতিপক্ষরা মানতে রাজি হয়নি।

সুমন ঘোষ অভিযোগ করে বলেন, এ বিরোধকে কেন্দ্র করে তার মা কল্পনা ঘোষ মঙ্গলবার দুপুরে বাড়িতে না থাকার সূযোগে বাসুদেব ঘোষ ও শ্যামসুন্দর ঘোষসহ কয়েকজন তাদের গাছ থেকে আনুমানিক তিন মণ আম পেড়ে নিয়ে যায়। প্রতিবাদ করায় মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাদের রান্না ঘর, কাঠঘর ও গোয়ালঘরে আগুন লাগিয়ে দেয় বাসুদেব ও শ্যামসুন্দর। প্রতিবেশি জয়ন্ত ঘোষের বাড়িতে কালিপুজা দেখতে আসা লোকজন ছুঁটে এসে ওই আগুন নিভিয়ে ফেলে। রাতে স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ি ও থানাকে অবহিত করা হয়। পরদিন বুধবার তিনি বাদি হয়ে বাসুদেব ও শ্যামসুন্দরের নামে তিনি এজাহার দায়ের পুলিশ তাকে বার বার থানায় বসাবসির মাধ্যমে মীূমাংসা করে নেওয়ার কথা বললেও মামলা নিচ্ছেন না। তবে সুমান ঘোষের বাড়িতে আম চুরি ও তাদের ঘরে আগুন দেওয়ার কথা অস্বীকার করেন বাসুদেব ঘোষ।

তালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু জিহাদ মোঃ ফকরুল আলম খান শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৬টায় সাংবাদিকদের বলেন, তিনি স্টেশনে ছিলেন না।মোবাইলে তিনি বিষয়টি জেনেছেন। বৃহষ্পতিবার রাতে তিনি থানায় ফিরেছেন। বিষয়টি আন্তরিকতার সঙ্গে তিনি দেখবেন।

(আরকে/এসপি/মে ২৭, ২০২২)