অরবিন্দ পাল : রবিবার রাত সাড়ে ৯টা। বইমেলা থেকে ফিরছি।  সোহরোওয়ার্দির বই মেলা থেকে শাহবাগ পর্যন্ত আসি তরুণ লেখক সারোয়ার জাহানকে সাথে নিয়ে। সে যাবে জিগাতলা ওই রোডের বাস পেয়ে বিদায় নিয়ে বাসে উঠে পড়ে। আমি একটি সুন্দর বিআরটিসি-একসেলেটর বাসে উঠি। যাব ফার্মগেট, ওখান থেকে তেজকুনি পাড়ায় ছোট বোনের বাসায়।

বিশাল জ্যাম রাস্তায় । লক্ষ করছি পাশের সিটে বসা ত্রিশ বত্রিশ বছরের একটি লোক মোবাইলে নিজের ছবি তুলছে। তুলতেই পারে সে । কিছুক্ষণ পর আমাকে সে তার মোবাইলটির একটি ছবির ভিডিও দেখায়। দেখলাম একজন ইশারা ভাষায় কিছু বুঝাচ্ছে। লোকটি ইশারায় আমাকে বুঝায় সেও শুনতে পায় না এবং কথা বলতে পারে না। সে তার বন্ধুকে এমএমএস করেছে তার বন্ধুও তাকে এমএমএস এ উত্তর পাঠিয়েছে। বন্ধুটিও তার মতোই। মাল্টিমিডিয়া সার্ভিসএ অনেককিছুই প্রকাশ করা যায় তাহলে।

জ্যামে আটকা ছিলাম রূপসী বাংলা, বাংলামোটর, কাওরানবাজারে । ওর সাথে ভাব বিনিময় করলাম। আমাদের বাড়িতে অনেক বছর বাক প্রতিবন্দ্বী লোক কাজ করতো। নাম সত্যেন্দ্র । আমরা সবাই তার সাথে ভাব বিনিময় করতে পারতাম। এ কারণে লোকটি বোধ হয় ইশারা ভাষা বুঝাতে সাচ্ছন্দ্য বোধ করছিল। বাস থেকে নামবার আগে কি নাম, বাবার নাম ঠিকানা ও কি কাজ করি লিখে নোট প্যাডটা তাকে বাড়িয়ে দিলাম । সেও তার নাম ঠিকানা লিখে দিল। গাজীপুরের কোনাবাড়িতে সে কাজ করে। ফার্মগেটে বাস থামলো। নেমে গেলাম বাস থেকে। ভাবছি মোবাইল ফোন কাজে অকাজে দুটোতেই লাগে। যারা কথা বলতে পারে না শুনতে পারে না তারা এমএমএস করে ভাষা বিনিময় করতে পারে। জয়তু মোবাইল ফোন।