কক্সবাজার প্রতিনিধি : কক্সবাজার শহরের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল পুলিশের অত্যাচার ও চাদাবাজীতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে পরিবহন শ্রমিক, পর্যটকসহ স্থানীয়রা।

সূত্র জানায় ১ জন হাবিলদার ও ৩ জন কনস্টেবলের সম্বনয়ে পর্যটক ও সাধারন যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য বিগত আট মাস পূর্বে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের ৩য় তলায় একটি ক্যাম্প গঠন করা হয়। কিন্তু গত ২ মাস যাবৎ পুলিশের চাদাবাজীতে ও অত্যাচারে অসহায় হয়ে পড়েছে যাত্রী সাধারন । প্রায়ই প্রতিদিনই পুলিশের হাতে সর্বস্ব হারাচ্ছে নিরীহ যাত্রী ও পর্যটকরা।

বাসটার্মিনালের এক ব্যবসায়ী নাম গোপন রাখার শর্তে জানিয়েছেন, ২৮ সেপ্টেম্বর বেলা ১ টায় চট্টগ্রামগামী শ্রামলিমা পরিবহনের ৪ জন যাত্রীকে কনস্টেবল রফিক ও নাছির বাস থেকে নামিয়ে ফেলে। পুলিশ ফাড়ির ৩ তলায় নিয়ে আটক করে তাদের কাছ থেকে ১ টি মোবাইল ও নগদ ৬ হাজার টাকা আদায় করে। পরে বেলা ৩ টায় আরকান সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সহকারী সম্পাদক কলিম উল্লাহ করিম ও শ্যামলিমা পরিবহনের ইনচার্জ নজির আহম্মদের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে আরকান সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সহকারী সম্পাদক কলিম উল্লাহ করিম ৪ জন নিরীহ যাত্রীকে পুলিশের কাছ থেকে জিম্মায় নিয়ে বাসে তুলে দিয়েছেন।

২৬ সেপ্টেম্বর সকাল ১০ টায় বাস টার্মিনালের ১ নং গেইট থেকে টেকনাফের হ্নীলার জনৈক সাদ্দাম হোসনকে ২ হাজার ইয়াবা সহ আটক করে । পরবর্তীতে বিকাল ৪ টার দিকে তাকে সিএনজি যোগে লিংকরোড়ের দিকে নিয়ে যায় কনস্টেবল রফিক।

এ বিষয়ে বাসটার্মিনাল পুলিশের এক সোর্স জানিয়েছেন, সাদ্দামের কাছ থেকে নগদ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে পুলিশ তাকে ছেড়ে দিয়েছে।

এর ১০ দিন পূর্বে হ্নীলার ১ জনকে আড়াই হাজার ইয়অবা সহ আটক করে। পরবর্তীতে বাস টার্মিনাল এলাকার এক ইয়াবা ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয় বাস টার্মিনাল পুলিশ।

ইয়াবা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে জব্দ করা ইয়াবা বিক্রির জন্য পুলিশের নিজস্ব ইয়াবা বিক্রেতা রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাস টার্মিনাল শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা।

এই ঘটনার ১৫ দিন পূর্বে মালেয়শিয়াগামী নরসিংদীর ৩ জন ব্যক্তিকে আটক করে টার্মিনাল পুলিশ।
আটকের ঘন্টা দু’য়েক পর বাস টার্মিনাল পুলিশ ক্যাম্পের হাবিলদার শুভ চাকমা শহরের চিহ্নিত পাচারকারী আলী আহম্মদকে ৬০ হাজার টাকার বিনিময়ে দিয়ে দেয়।

এ বিষয়ে বাস টার্মিনাল পুলিশ ক্যাম্পের হাবিলদার শুভ চাকমার ব্যবহৃত মুঠোফোন ০১৮৩০৩০৭১৪৪ যোগাযোগ করা হলে তিনি শুভ চাকমা নন্ বলে অস্বীকার করে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। এর পর থেকে তিনি আর মুঠোফোন রিসিভ করেন নি।

এদিকে গত ২৯ সেপ্টেম্বর বিকাল ৫ টায় বাস টার্মিনল সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখা যায়। নাছির নামের একজন কনস্টেবল বসিটার্মিনাল ভবনের নিচতলার মোবাইল কেয়ার সেন্টার নামের একটি দোকানে বসে কম্পিউটারে সিনেমা দেখছেন। এঠাড়া রফিক বাসটার্মিনালের চিহিুত ছিনতাইকারীদের সাথে বসে খোশ গল্প করছেন।

এ বিষয়ে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তোফায়েল আহমেদ জানিয়েছেন, এ বিষয়গুলো সম্পর্কে তিনি অবহিত নন। তবে খোজ খবর নিয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে অতিদ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলেও তিনি আশ্বাস প্রদান করেছেন।

(টিটি/এএস/সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১৪)