মো. আব্দুল কাইয়ুম, মৌলভীবাজার : মৌলভীবাজার সদর উপজেলার নাজিরাবাদ ইউনিয়নের মানিকপুর গ্রামের গরীব কৃষক আজিজুর রহামানের ৬ বছর বয়সী মেয়ে শিশু ফাইজা আক্তার পাশের বাড়িতে খেলতে গিয়ে আগুনে পুড়ে যাওয়ার চারমাস পর অবশেষে মারা গেছে।

বৃহস্পতিবার (২জুন) সকালে ঢাকার বিশেষায়িত শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় মৃত্যু হয় শিশু ফাইজার।

পারিবারিক সূত্রের বরাত দিয়ে নাজিরাবাদ ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. মহসিন আহমদ জানান, বর্তমানে ঢাকায় ময়না তদন্তসহ আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন শেষে শিশুটির মরদেহ নিয়ে আসা হবে গ্রামের বাড়িতে। কীভাবে আগুনে পুড়ল শিশুটি জানতে চাইলে ইউপি সদস্য মহসিন জানান,টুপাটুপি খাওয়ার জন্য শিশু ফাইজাসহ কয়েক শিশু জড়ো হয়েছিলো মানিকপুর গ্রামের সৌদি প্রবাসী জিয়াউর রহমানের বাড়িতে, সেখানে খড়ে আগুন লাগাতে গিয়ে আগুন লেগে যায় এই শিশুর গায়ে থাকা জামায়। সেখান থেকেই আগুনের সূত্রপাত।

সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি সদর উপজেলার নাজিরাবাদ ইউনিয়নের মানিকপুর গ্রামের সৌদি প্রবাসী জিয়াউর রহমানের বাড়ির উঠানে খেলতে যায় একই গ্রামের পাশের বাড়ির কৃষক আজিজুর রহমান এর মেয়ে শিশু ফাইজা (৬)। সেখানে সমবয়সী শিশুদের সাথে খেলতে গিয়ে একপর্যায়ে নিজের গায়ে থাকা জামায় আগুন লেগে মুহূর্তেই আগুন পুরো শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। এসময় বাড়ির লোকজন আগুন নিভাতে এগিয়ে আসলেও ততক্ষণে শিশুটির শরীরের বেশিরভাগ অংশ পুড়ে যায়। সাথে সাথে নিয়ে যাওয়া হয় মৌলভীবাজার সদর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে। সেখান থেকে পরদিন ৩ ফেব্রুয়ারি সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই চিকিৎসা চলে শিশুটির। দীর্ঘদিন পুড়া শরীরের অবস্থা অপরিবর্তিত থাকায় গরীব কৃষক আজিজুর রহমানের পক্ষে মেয়ের চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব না হওয়ায় পরবর্তীতে শিশুটিকে নিয়ে আসা হয় বাড়িতে।

এদিকে বাড়িতে থাকায় শিশুটির অবস্থার আরো অবনতি হলেও দিনমজুর গরীব ওই কৃষকের পক্ষে স্থানীয়রা চাদা তুলে গতমাসের ২৫ মে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে শিশুটিকে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার (২ জুন) সকালে শিশুটির মৃত্যুর খবর পান পরিবারের সদস্যরা।

মৌলভীবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াছিনুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ আসেনি।

নাজিরাবাদ ইউনিয়নের সাবেক সদস্য মাহমুদ মিয়া বলেন,জানতে পেরেছি শিশুটির শরীরের প্রায় ৭০ শতাংশ পুড়ে গেছে। শিশুটিকে বাঁচাতে অনেকে এগিয়ে আসলেও শেষ মুহূর্তে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।

(একে/এএস/জুন ০২, ২০২২)