পাথরঘাটা প্রতিনিধি : বরগুনার পাথরঘাটায় এক বুদ্ধি প্রতিবন্ধী নারী ধর্ষণের ঘটনায় আসামিদের সঙ্গে সমঝোতা ও ওই মামলা তুলে নিতে স্থানীয় ইউপি সদস্য মহিউদ্দিন আহমেদ পান্না মামলার বাদিকে জুতা দিয়ে পিটিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ওই বুদ্ধি প্রতিবন্ধী নারী ধর্ষণ মামলার বিচার না পাওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন।

মহিউদ্দিন আহমেদ পান্না মিয়া বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার নাচনাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের মানিকখালি ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য।

বুদ্ধি প্রতিবন্ধী নারীর বড় বোন বলেন, আমার ছোট বোনকে গত ৩১ মার্চ দুপুর দেড়টার দিকে ছোট ভাই মাহবুব জমাদ্দারের খালি ঘরে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করে প্রতিবেশী রাব্বি বাঘা।

এ ঘটনায় আমার ভাইয়ের ছেলে আব্দুল্লাহ জমাদ্দার প্রত্যক্ষদর্শী। ঘটনার দুইদিন পর গত ৩ এপ্রিল ওই রাব্বি বাঘাকে আসামি করে

পাথরঘাটা থানায় মামলা করা হয়। মামলা দায়ের পর থেকেই আসামীর সঙ্গে যোগসাজশে ইউপি সদস্য মহিউদ্দিন আহমেদ পান্না আমাকে মামলা তুলে নিতে বারবার নির্দেশ দিয়ে যাচ্ছেন। তার কথা না শোনায় মামলা দায়েরের ৮ থেকে ১০দিন পর আমাকে ৫ হাজার টাকা দিয়ে বলেন এখন মামলা তুলে নে।

এরপরও যখন মামলা তুলতে অস্বীকার করি তখন ওই ইউপি সদস্য স্থানীয় এক ব্যক্তির মাধ্যমে তার বাড়িতে আমাকে ডেকে পাঠান। খবর পেয়ে তার বাড়িতে উপস্থিত হওয়া মাত্রই ৫ হাজার টাকা পেয়ে মামলা তুলে না নেওয়ায় বা মামলার তদন্ত কর্মকর্তার সাথে ঘটনার ব্যাপারে কিছু না বলায় ইউপি সদস্য আমাদের উপর প্রচন্ড রেগে যান। একপর্যায়ে আমাকে জুতা দিয়ে পিটুনিসহ চার থেকে পাঁচটি চড় থাপ্পড় দেন। একই সঙ্গে ওই মামলা তুলে নিতে আমাকে ও আমার বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বোনকে হুমকি-ধামকি দেন। এ সময় ইউপি সদস্য পান্না মিয়ার গাড়ি চালক জহির উপস্থিত ছিলেন।

তিনি আরও বলেন, মারধরের দুইদিন পর আমাদের বাড়িতে জহির নামের এক মোটরসাইকেল চালককে পাঠিয়ে আমাকে দেওয়া ৫ হাজার টাকা ফেরৎ নেন ইউপি সদস্য মহিউদ্দিন আহমেদ পান্না। এ ঘটনার পর থেকে ধর্ষণ মামলার বিচার না পাওয়ার শঙ্কাসহ চরম নিরাপত্তা হীনতায় রয়েছি অামরা।

অভিযোগ প্রসঙ্গে ইউপি সদস্য পান্না বলেন, আমি ভিকটিমকে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে এসব কথা আপনাকে কে বলেছে। আমি কাউকে হুমকি-ধামকি দেইনি। এসব ব্যাপারে আমি কোনো কথা বলবো না।

এ ব্যাপারে ধর্ষণ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পাথরঘাটা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো.বেলায়েত হোসেন বলেন, মামলার তদন্ত চলমান তবে ভিকটিমকে নিয়ে বরগুনা হাসপাতলে পরীক্ষার জন্য গিয়েছিলাম। কিন্তু ভিকটিম কিছুটা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হওয়ায় ডাক্তারকে দেখে ওই নারী দৌড়ে পালিয়েছেন। তাই ধর্ষণের পরীক্ষা করা যায়নি।

(এটি/এসপি/জুন ০৫, ২০২২)