শাহ্ আরম শাহী, দিনাজপুর : বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) এগ্রো সার্ভিস সেন্টার-দিনাজপুরে উৎপাদিত হচ্ছে, মালটা, আপেল, নাসপাতি, ড্রাগন, চেরি সহ দেশি-বিদেশি ৭৫টি জাতের প্রায় আড়াই’শ জাতের ফল,ফুল ও ঔষুধি গাছের চারা। এসব চারা সম্প্রসারিত হলে আগামী ৫ বছরের মধ্যে দিনাজপুরে ফলের উৎপাদন দ্বিগুণের পাশাপাশি ফুল ও ঔষুধি গাছের ব্যাপক সম্প্রসারণ ঘটবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। সেইসাথে মানুষ পাবে নানান ফলের স্বাদ এবং মিটবে ঔষুধি গুণাগুন ও পুষ্টি’র চাহিদা।

শহর থেকে চার কিলোমিটার দূরে চেহেলগাজী মাজারসংলগ্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) এগ্রো সার্ভিস সেন্টারের এ খামার। ৫২ একর জায়গার এ খামারে বর্তমানে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে চারা এনে কলম তৈরি করা হচ্ছে। এখানে ৩৫ জাতের আমের চারা, ১০ জাতের লিচু, ৮ জাতের আনার, ৫ জাতের মাল্টা, ৬ জাতের কমলা, ২ জাতের আপেল, জাম, বরইসহ প্রায় ৭৫ প্রজাতির ফলের উন্নত চারা, কলম, গুটিকলম, বীজ উৎপাদন ও সরবরাহ করা হচ্ছে। খামারে কর্মরত শ্রমিক মজিবর রহমান জানালেন,তারা ২০ জন শ্রমিক নিয়মিত কাজ করেন,এই খামারে। কলম ও গুটি কলম ছাড়াও নিজেরাই মান সম্মত বীজ উৎপাদন করেন তারা। তাদের উৎপাদিত গাছের চারার প্রতি মানুষের বিশ্বাস ও আস্থা জন্ম নিয়েছে। প্রতিনিয়ত মানুষ আসছে,চারা নিতে।

দেশিও ফলের পাশাপাশি রয়েছে এখানে,মালাটা.কমলা,আপেল সহ বিদেশি প্রায় ৮০ প্রকারের চারা। এই সেন্টারে দেশি-বিদেশি ফলের পাশাপাশি রয়েছে বিভিন্ন প্রকার ঔষুধি ও মসলা জাতীয় গাছের চারাও। এসব চারা সুলভমূল্যে পেলে বাগান করতে উৎসাহিত হচ্ছে অনেকেই।

গাছের চারা নিতে আসা গৃুহনী মনোয়ারা বেগম জানালেন,তিনি ছাদে নয়,বাড়ির আঙ্গিনায় বাগান করতে চান। তাই চারার খোঁজে এসেছেন তিনি। পেয়েও গেছেন,মনের মতো পছন্দ গছের চারাও।

চারা নিতে আসা সৈকতও জানালেন, একই কথা। তিনি শখের বশে বাড়িতে গাছ লাগাতেই চারা নিতে এসেছেন।
বিএডিসি’- এগ্রো সার্ভিস সেন্টারের পরিচালক মোজাফ্ফর হোসেন জানালেন,সম্প্রতি খামারটিতে উচ্চফলনশীল ও বিভিন্ন প্রকার প্রতিকূলসহিষ্ণু জাতের বীজ উৎপাদন বৃদ্ধির কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে। খামারে ঔষধি গুণসম্পন্ন চন্দন, দেশি নিম, বহেড়া, হরীতকী, অর্জুন, বাসক, কালোমেঘ, নিশিন্দা, এলোবেড়া,অশোকগাছের চারাও পাওয়া যায়।
বিএডিসি’ মহাব্যবস্থাপক মো.গোলাম কিবরিয়া জানালেন,সারা দেশে বিএসডিসি’র এ ধরনের ১৪টি এ্যাগ্রো সার্ভিস সেন্টার রয়েছে। দিনাজপুরের সেন্টারটি গুটিকলম, চারা-বীজ উৎপাদন ও আয়ের ক্ষেত্রে টানা তৃতীয়বারের মতো প্রথম হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন,আগামী ৫ বছরে এ জেলায় ফলের উৎপাদন দ্বিগুণ হবে।

চত্বরজুড়ে করা হয়েছে ক্যাকটাস-অর্কিড শেড। তাতে ঝুলছে বাহারি অর্কিড, অর্নামেন্টাল প্লান্ট। চত্বরের পাশেই শৌখিন মৎস্য কর্নারে নানা প্রজাতির মাছ। বৈঠকখানার আদলে সেবা ও ্রপ্রযুক্তি হস্তান্তর কর্নার করা হয়েছে।

(এস/এসপি/জুন ০৫, ২০২২)