রাজন্য রুহানি, জামালপুর : সীতাকুণ্ডে নিহত গাড়িচালক মাসুদের মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে আনার পর দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৯ জুন) সকালে মাসুদের নিজবাড়ি জামালপুরের সরিষাবাড়ী বয়সিং গ্রামে জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

এদিকে, দুপুরে তার পরিবারের হাতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১ লাখ টাকা অনুদান দেওয়া হয়। এ অনুদানের টাকা নিহতের পরিবারের হাতে তুলে দেন নির্বাহী অফিসার উপমা ফারিসা।

শনিবার রাতে সীতাকুণ্ডে সংঘটিত বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণে মাসুদ গুরুতর দগ্ধ হন। এরপর তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার রাতে তিনি মারা যান।

ভাটারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বোরহান উদ্দিন বাদল জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টার দিকে মাসুদের লাশ নিজবাড়িতে পৌঁছায়। সকাল ৮টার দিকে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

পারিবারিক সূত্র জানায়, কৃষকদম্পতি খলিলুর রহমান ও জমেলা বেগমের তিন ছেলের মধ্যে সবার বড় ছিলেন মাসুদ মিয়া। পড়াশোনায় মাধ্যমিক পেরোতে পারেননি, ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য পাড়ি জমান সৌদি আরবে। ৫ বছর প্রবাস জীবন কাটিয়ে দেশে আসেন। এরপর ২০১৫ সালের দিকে নতুন কর্মসংস্থানের জন্য ছুটে যান বন্দরনগরী চট্টগ্রামে। এরপর সীতাকুণ্ডের কনটেইনার ডিপোর একটি কোম্পানিতে গাড়িচালকের চাকরি নেন। সেখানে তিনি একসপ্তাহ দিনে এবং পরের সপ্তাহ রাতে ডিউটি করতেন। শনিবার রাতে সংঘটিত বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণে তিনি গুরুতর দগ্ধ হন। এরপর তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার রাতে তিনি মারা যান।

নিহতের স্ত্রী সুমি আক্তার জানান, মাসুদ ১০ বছর আগে বিয়ে করেন। তার ২ বছর বয়সী একটা ছেলে এবং ৭ বছর বয়সী একটা কন্যাসন্তান রয়েছে। স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে তিনি সীতাকুণ্ডে ভাড়াবাসায় থাকতেন। বিস্ফোরণের রাতেই তার নাইট ডিউটির সাপ্তাহিক শেষদিন ছিলো। বিস্ফোরণের পর তার সাথে একবার কথা হয়, এরপর থেকে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তিনি কান্নাজড়িত কন্ঠে আরো জানান, স্বামীছাড়া দুই অবুঝ শিশুর লালনপালনসহ সামনের দিনগুলো কীভাবে তার কাটবে, সেই চিন্তায় দুচোখে অন্ধকার দেখছেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার উপমা ফারিসা জানান, নিহত মাসুদ মিয়ার পরিবারের জন্য জেলা প্রশাসন থেকে ১ লাখ টাকা অনুদান বরাদ্দ করেছে। ইতোমধ্যেই নিহতের বাড়িতে গিয়ে শোকাহত পরিবারকে সমবেদনা ও অনুদানের টাকা তুলে দেওয়া হয়েছে। পরিবারটির যেকোনো প্রয়োজনে প্রশাসন সহায়তা করবে বলেও তিনি জানান।

(আরআর/এসপি/জুন ০৯, ২০২২)