অঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : ঔষধ ও পুষ্টি গুনে সমৃদ্ধ বিদেশী ফল ড্রাগন বানিজ্যিক ভাবে চাষ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন মো. আলমাস উদ্দিন নামের এক সৌখিন ব্যবসায়ী। ড্রাগন বাগানের প্রতিটা গাছে শোভা পাচ্ছে এখন লাল-হলুদ ড্রাগন ফল। সহজ পদ্ধতিতে চাষাবাদ এবং রোগ-বালাই কম ও বাজারে ড্রাগনের চাহিদা থাকায় বিদেশী এ ফল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে এলাকার অন্যান্য কৃষকেরা। 

ড্রাগন বাগানের পরিচর্যাকারী সুজন হোসেন জানান, গত দেড় বছর পূর্বে ঢাকার ঔষধ ব্যবসায়ী আলমাস উদ্দিন তার শ্বশুরের ৮০ শতক জমিতে পাঁচ হাজার ড্রাগন চারা রোপণ করেন। এতে তাদের গ্রামের তিন জনের কর্মসংস্থান হয়েছে। সঠিকভাবে পরিচর্যার পর এ বছর প্রতিটা গাছে ড্রাগন ফল ধরেছে।

বাগান মালিক আলমাস উদ্দিন জানান, ব্যবসার কাজে চিনে গিয়ে শখের বসে ড্রাগন চারা সংগ্রহ করেন। এরপর গৌরনদী উপজেলার আধুনা বটতলা এলাকায় তার শশুরের ৮০ শতক জমির উপর বেড তৈরি করে ড্রাগন চারা রোপণ করেন। বেড তৈরি থেকে শুরু করে চারা রোপন ও গাছের পরিচর্যায় এ যাবত তার প্রায় ১৫ লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়েছে।

তার বাগানে লাল, হলুদ ও সাদা তিন প্রকারে ড্রাগন চারা রোপন করেছেন। বর্তমানে প্রতিটা গাছে ড্রাগন ফল ধরেছে। পর্যায়ক্রমে ফলন বৃদ্ধি পাবে। তিনি আরও জানান, ইতিমধ্যে তার বাগানের ড্রাগন ফল বাজারজাত করা শুরু হয়েছে। বর্তমানে বাজারে মৌসুমে ফল ভরপুর থাকায় প্রতিকেজি ড্রাগন পাইকারী ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা মূল্যে বিক্রি হচ্ছে। ড্রাগন চাষ করে তিনি লাভবান হওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

গৌরনদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মামুনুর রহমান বলেন, ড্রাগন বিদেশী ফল হলেও বর্তমানে আমাদের দেশে ড্রাগনের চাষ শুরু হয়েছে। পুষ্টিগুনে সমৃদ্ধ ড্রাগনে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি, মিনারেল এবং উচ্চ ফাইবারযুক্ত, ফিবার, ফ্যাট, ক্যারোটিণ, ফসফরাস, এসকরবিক এসিড, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ওমেগা-৩ ও ওমেগা-৯ রয়েছে। একটি ড্রাগন ফলে ৬০ ক্যালোরি শক্তি এবং প্রচুর ম্যাগনেসিয়াম, বিটাক্যারোটিন ও লাইকোপিনের মতো অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট রয়েছে। ডায়াবেটিস ও ক্যানসার প্রতিরোধে ড্রাগন ফল খুবই কার্যকরী।

তিনি আরও জানান, মাঠ পর্যায়ে কৃষক ও খামারীদের বিদেশি ফল চাষের ব্যাপারে আগ্রহী করে তুলতে পারলে একদিকে যেমন বিদেশী ফলের আমদানী নির্ভরতা কমে আসবে অন্যদিকে ফল চাষ করে কৃষকরা লাভবান হতে পারবে।

(টিবি/এসপি/জুন ১০, ২০২২)