ইমরান হোসাইন, সিরাজগঞ্জ : সিরাজগঞ্জ শহরের নিকটতম বিনোদন কেন্দ্রের মধ্যে অন্যতম যমুনার পাড়। সাথেই রয়েছে শেখ রাসেল শিশু পার্ক। যেখানে প্রতিদিন বিকেলে সকল প্রকার মানুষের পদচারনায় মুখরিত হয়ে ওঠলেও সকাল থেকে দুপুর  পর্যন্ত আড্ডা দিতে দেখা যায় ইউনিফর্ম পরা স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের।

বিশেষ করে ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ইউনিফর্ম পরেই নানা ধরনের অপরাধ কর্মকাণ্ডে দেখা যায় ।

প্রকাশ্যে ধুমপান, একে অপরের সাথে বিভ্রান্ত মূলক আলাপ আলোচনা,ছেলেমেয়ে হাতধরে ঘোরাঘুরি সহ নিকটস্থ ভাবে বসে থাকতে দেখা যায়। ফলে এখানে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘুড়তে এসে লজ্জায় পড়ছে পর্যটকেরা।

আর এসব আড্ডার কেন্দ্রগুলো হলো যমুনার পাড়ে গড়ে ওঠা শেখ রাসেল শিশু পার্ক, ক্রসবার-৩, যমুনার পাড় দিয়ে পর্যটকদের জন্য যাত্রী ছাউনি, হার্ডপয়েন্ড, বিভিন্ন ভ্রাম্যমাণ চটপটি ও ফুচকার দোকান, টোং দোকান ও চায়ের দোকান।

বেশ কয়েকদিন সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নদীর পারে শিশু কবরস্থানের পাশেই গড়ে ওঠা চায়ের দোকানে ১০ থেকে ১৫ জন শিক্ষার্থী জটলা করে বসে প্রকাশ্যে ধুমপান ও অশ্লীল ভাষায় একে অপরের সঙ্গে কথা বলছে।যাদের অধিকাংশের বয়স ১৫ থেকে ১৭।

এছাড়াও যমুনার পার ঘেঁষে শেখ রাসেল শিশু পার্ক থেকে হার্ড পয়েন্ট পর্যন্ত এই রাস্তা দিয়ে দামি ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল নিয়ে হেলমেট বিহীন বেপরোয়া ভাবে হাইস্পিডে চলাফেরা করছে তারা, যার ফলে মাঝে মাঝে ঘটছে বড় বড় দুর্ঘটনা।

পাশেই ক্রসবার-৩ সেখানে গিয়ে দেখা যায় ক্রসবারের ভিতরে রাস্তার দুপাশে একটু পরে পরেই স্কুল কলেজের ছেলে মেয়ের অবাধ মেলামেশার চিত্র। যা দেখে উদ্বিগ্ন হচ্ছে সাধারন মানুষ।লজ্জা ও বিচলিত হতে হচ্ছে পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরতে আসা মানুষের

এসকল জায়গা গুলোতে সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত দেখা যায় ইউনিফর্ম পড়া শিক্ষার্থীদের। অথচ শহরের সকল স্কুলের ক্লাস শুরু হয় ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে। যে সময়ে তাদের থাকার কথা স্কুলের ক্লাসে।

বর্তমানে শিক্ষার্থীদের ক্লাস ফাঁকির প্রবণতা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধির কারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আগের মতো শাসন নেই। দেখা গেছে, স্কুল পালানো শিক্ষার্থীদের অনেকে প্রেমে জড়িয়ে পড়ছে। বয়ঃসন্ধিকালের আবেগ রোধ করতে না পেরে অনেকে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছে। যার কারনে অভিভাবকরা সন্তানের পেছনে প্রচুর অর্থ খরচ করেও সুশিক্ষা শিক্ষিত করাতে ব্যার্থ হচ্ছে এবং শিক্ষার্থীরদের দক্ষতা ও দৃষ্টিভঙ্গি অর্জন ঠিকমতো করাতে পারছে না।যার কারনে সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন অভিভাবকেরা।

বিএল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল আলম বলেন,বর্তমানে ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের হাতে মোবাইল দেওয়ার কারনে আজ তারা স্কুলের প্রতি আকৃষ্ট কম হচ্ছে এবং স্কুলে এসেও ক্লাস না করে বিভিন্ন ভাবে আড্ডায় মেতে উঠছে।এছাড়াও স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের আগের মতো শাসন করতে না পারার কারণেও এসকল সমস্যা গুলো হচ্ছে।এজন্য ছাত্র ছাত্রীদের অভিভাবকদের সচেতন হওয়া খুবই জরুরি।

সিরাজগঞ্জ সদর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, এ সকল নিষয়ে স্কুল কলেজের শিক্ষকেরা যদি আমাদেরকে অভিযোগ দেয় তাহলে আমরা ব্যবস্থা গ্রহন করবো।এছাড়াও হেলমেট বিহীন বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানোর বিষয়ে জানতে চায়লে তিনি বলেন,যমুনার পারে বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানোর কারনে আমরা যমুনার পারে সিড়ি কোঠার সামনে বাঁশের বেরিগেড দিয়েছি যাতে করে সাধারণ মানুষ বেপরোয়া ভাবে মোটরসাইকেল চালাতে না পারে এবং যমুনার পারে রাস্তা গুলোতে সবোর্চ্চ গতিসীমা ২০ কি.মি রাখার জন্য সাইনবোর্ড টানিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি।

(আই/এসপি/জুন ১২, ২০২২)