ইমরান হোসাইন, সিরাজগঞ্জ : উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষনে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে জেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে।

গেল ১২ ঘন্টায় ১০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে শনিবার বিকালে শহর রক্ষা বাধ পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড সিরাজগঞ্জের গেজ রিডার (পানি পরিমাপক) মো: হাসানুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হচ্ছে। ইতিমধ্যেই জেলার পাচটি উপজেলার নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চল বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। এসকল এলাকার বসতবাড়িতে পানি উঠে পড়ায় বিপাকে পড়েছেন বানভাসিরা। রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় নৌকায় চলাচল করছে বানভাসিরা। বন্যা কবলিত এলাকাগুলোর বিস্তির্ন ফসলি জমির উঠতি ফসল তলিয়ে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে কৃষক।

বন্যাকবলিত আমেনা খাতুন বলেন, চরাঞ্চলে বাড়ি হওয়া প্রতি বছর পানিতে বাড়ি ডুবে যায়৷ কি করবো গরিব মানুষ কিছু করার নাই। এবারও বাড়িতে পানি উঠছে বাধে এসে আশ্রয় নেয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।

চরাঞ্চলের কৃষক আবু ইউসুফ বলেন, বন্যার পানিতে তিল ডুবে গেছে, কিছু তিল কাটতে পারলেও বেশির ভাগই পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে আর্থিক ক্ষতির মধ্যে পড়ে গেছি।

বরাত আলি বলেন, পাট ডুবতে শুরু হয়েছে। যে হারে পানি বাড়ছে তাতে পাট কেটে শেষ করতে পারবো না।খুব চিন্তার মধ্যে আছি।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড সিরাজগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম জানান, যমুনা নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধগুলো সর্বক্ষণ নজরদারিতে রাখা হয়েছে। কোথাও কোনো সমস্যা দেখা দিলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সিরাজগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বাবলু কুমার সূত্রধর জানান, ধান কাটা এবং বাদাম তোলা হয়ে গেছে। নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চর অঞ্চলের নিচু এলাকার ফসল ডুবে গেছে তিল, পাট, শাকসবজি ও আউশধান।

জেলা ত্রাণ ও পূনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আক্তারুজ্জামান জানান, যমুনার পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়াতে নিম্ন অঞ্চলে কিছু জায়গায় পানি ঢুকছে তবে এখনো সেইভাবে কোন ভয়াবহতা দেখা দেয়নি। আমরা উপজেলার কর্মকর্তাদের সাথে সর্বক্ষণ খোঁজ রাখছি। এবং তারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের সাথে যোগাযোগ রাখছে। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্য মজুদ আছে। প্রায় ৯১১ মেট্রিক টন চাল , ২০ লক্ষ নগদ টাকা ও ৪ হাজার শুকনো খাবার আছে। সব ধরনের প্রস্তুতি ইতিমধ্যে নেয়া হয়েছে।

(আই/এসপি/জুন ১৮, ২০২২)