মদন প্রতিনিধি : টানা বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে মদনের বন্যার অবস্থা দিন দিন অবনতি হচ্ছে। শুক্রবার সকাল থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত বন্যার পানি বৃদ্ধি পেয়ে প্লাবিত হয়েছে উপজেলার প্রায় শতাধিক গ্রাম। পানি বন্ধি অবস্থায় রয়েছে হাজারো মানুষ। অনেকেই সব হারিয়ে ছুটছে আশ্রয়কেন্দ্রে। ডুবে গেছে উপজেলার বেশ কয়েকটি মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়। 

উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয়দের লোকজনদের তথ্যমতে, শুক্রবার সকাল থেকে অবিরাম বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে উপজেলা গোবিন্দশ্রী ও মাঘান ইউনিয়নের সবকয়টি গ্রামে বন্যার পানি ঢুকে পড়ে। পানি বৃদ্ধি অব্যহত থাকায় শুক্রবার রাতেই ফতেপুর, তিয়শ্রী, মদন ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রাম বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়। এ ছাড়াও পৌরসদরসহ উপজেলায় নিম্নাঞ্চলগুলো বর্তমানে প্লাবিত হয়েছে। বন্যার পানি ঢুকেছে সবকটি ইউনিয়নেই। পানি বৃদ্ধি পেয়ে বসত ঘর ডুবে যাওয়ায় লোকজন ছুটছে আশ্রয় কেন্দ্রের দিকে।

শনিবার উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বসত ঘরে পানি ঢুকলেও পানি বন্দি অবস্থায় রয়েছেন অনেকেই। বাড়িতে থাকা ধান,চাল ও গবাদি পশু রেখে আশ্রয় কেন্দ্রে যাচ্ছেন না তারা। আবার কেউ কেউ এসব নিয়েই ছুটছেন আশ্রয়কেন্দ্রে এবং নিজেদের আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে। বন্যা পরিস্থিতি আরো অবনতি হওয়ায় সীমাহীন দূর্ভোগে পড়েছেন মদন উপজেলার বাসিন্দারা।

এদিকে বন্যা কবলিত এলাকার মানুষের জন্য উপজেলায় ৪০ টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত করেছে উপজেলা প্রশাসন। সার্বক্ষণিক বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য ৯ টি কন্টোল রুমের সেবা অব্যাহত রয়েছে। শনিবার দুপুর পর্যন্ত আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে প্রায় ১ হাজারের বেশী পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রত্যেকটি পরিবারের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের জন্য চাল,ডালসহ সব ধরণের বরাদ্দের ব্যবস্থা রয়েছে বলে জানা গেছে। এর পাশাপাশি পানি বন্দি লোকজনদের উদ্ধার করে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসার জন্য সকাল থেকে প্রশাসেনর লোকজন কাজ করে যাচ্ছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ জানান, শনিবার দুপুর পর্যন্ত বন্যার পানিতে মদন উপজেলার প্রায় শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বন্যার পরিস্থিত মোকাবেলার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরণের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ৪০ টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত এবং প্রয়োজন হলে আরো আশ্রয়কেন্দ্র বাড়ানো হবে।

তিনি আরো জানান, শনিবার দুপুর পর্যন্ত ১ হাজারের বেশী পরিবার আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। প্রত্যেক পরিবারের মাঝে শুকনো খাবার ও নগদ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। তাদের সব ধরণের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। শনিবার দুপুর পর্যন্ত মদন উপজেলায় প্রায় ২২ হাজারের বেশী পরিবার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

(এম/এসপি/জুন ১৮, ২০২২)