রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি : সোনালী ব্যাংক লি. লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার হায়দরগঞ্জ শাখায় ৮০ লক্ষ টাকা আত্মসাতের চেষ্টা করে ধরা পড়ায় তোলপাড় চলছে।

৮ লক্ষ টাকার সিসি ঋণের আবেদনে রহস্যজনকভাবে দুলাল হোসেন রাজু নামে এক ব্যবসায়ীর হিসাবে ৮০ লক্ষ টাকা মঞ্জুর দেখানো হয়। এ সুযোগে ওই ব্যবসায়ী ইতোমধ্যে ৯ লক্ষ ৯৪ হাজার টাকা উত্তোলন করে নিয়েও যান। ব্যবসায়ী ও ব্যাংক কর্মকর্তাদের যোগসাজশে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে বলে ব্যাংক সংশ্লিস্ট সূত্র ও বাজারের ব্যবসায়ীদের ধারণা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, হায়দরগঞ্জ উত্তর বাজারের রড ও টিন ব্যবসায়ী মো. দুলাল হোসেন রাজু তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মেসার্স জাহানারা এন্টারপ্রাইজের নামে সোনালী ব্যাংকের হায়দরগঞ্জ শাখায় একটি সিসি ঋণ হিসাব পরিচালনা করছেন। সম্প্রতি হিসাবটি নবায়নের সময় তিনি ৮ লাখ টাকার জন্য আবেদন ও প্রক্রিয়াগত কাজ সম্পন্ন করেন। কিন্তু ওই হিসাবে ৮০ লাখ টাকা মঞ্জুর দেখানো হয়। এরপর ব্যবসায়ী দুলাল সেই হিসাব থেকে ৯ লাখ ৯৪ হাজার টাকা উত্তোলন করে নিয়ে যান।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ওই শাখার সদ্য সাবেক ব্যবস্থাপক (ম্যানেজার) মহিউদ্দিন বাহার ও ব্যবসায়ী দুলাল হোসেন রাজু আত্মসাত জন্য পরিকল্পিতভাবে ৮ লাখ টাকা ঋণের বিপরীতে ৮০ লাখ টাকা মঞ্জুর দেখান। ঘটনা জানার পরও বর্তমান ম্যানেজার মো. মোস্তফা কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করে বিষয়টি চেপে যান। সম্প্র্রতি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ব্যাংক পরিদর্শনে এলে বিষয়টি ধরা পড়ে। বদলি করে দেয়া হয় ম্যানেজার বাহারকে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ম্যানেজার মহিউদ্দিন বাহার কমলনগরের হাজিরহাট শাখায় থাকতেও সেখানে বহু নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে ঋণ দেখিয়ে নিজে আত্মসাত করেন। সেখানেও এ নিয়ে যাচাই-বাছাই চলছে। তিনি এ শাখায় থাকতেও নামে-বেনামে বিভিন্ন জনকে ঋণ দেখিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে ব্যবসায়ী দুলাল হোসেন রাজু বলেন, আমি ৮ লাখ টাকার ঋণের আবেদন করেছি। আমার হিসাবে ৮০ লাখ টাকা থাকায় আমার চেকটি পাস করা হয়েছে। আমি সেখান থেকে ৯ লাখ ৯৪ হাজার টাকা উত্তোলন করেছি। আবেদনের অতিরিক্ত টাকা নেয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শুধু আমি নই, আরও অনেকের ক্ষেত্রে এ রকম হচ্ছে। আমরা কোনো হিসাব রাখি না, ব্যাংকের মাধ্যমেই হিসাব হচ্ছে।

ব্যাংকের ম্যানেজার মো. মোস্তফা বলেন, আমার আগের কর্মকর্তা মহিউদ্দিন বাহারের সময়ে এ ঋণ করানো হয়েছে। হিসাবের লেজারে ৮০ লক্ষ টাকা লেখা থাকায় ভুলবশত: ৮ লক্ষ টাকার ঋণ হিসাবের বিপরীতে ৯ লক্ষ ৯৪হাজার টাকা চলে যায়। অসাবধনতার কারণেই ৮ লক্ষ টাকার স্থলে ৮০ লক্ষ টাকা ঋণ মঞ্জুর দেখানো হয়েছে। ভুল সংশোধনের চেষ্টা চলছে।

(এমআরএস/জেএ/অক্টোবর ০২, ২০১৪)