ইমরান হোসাইন, সিরাজগঞ্জ : সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের টেকসই উন্নয়নের একমাত্র নিদর্শন মিটুয়ানি ব্রিজটি গত ৯ বছর উত্তাল যমুনায় দাড়িয়ে থাকলেও (২১ জুন) মঙ্গলবার রাত ৯টায় তীব্র স্রোতের টানে হারিয়ে যায়। সেতুটি এ অঞ্চলের যমুনায় চলাচলরত নৌযানের দিকনির্দেশক হিসেবেও বেশ পরিচিত ছিলো।

জানা যায়, ২০০১-২০০৬ বিএনপি আমলে ততকালীন স্থানীয় সংসদ সদস্য মেজর (অবঃ) মঞ্জুর কাদের উপজেলা সদরের সাথে চৌহালী দক্ষিনাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের লক্ষে উপজেলা সদর থেকে খাষপুখুরিয়া ও বাঘুটিয়া হয়ে উমারপুর ইউনিয়নের পাথরাইল বাজার পর্যন্ত একটি রাস্তা নির্মাণ করেন। সেই রাস্তার মিটুয়ানি খালে এই সেতুটি নির্মাণ করেন। শতভাগ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে নির্মাণ কাজ শেষ করতে ততকালীন সংসদ সদস্য নিজে বার বার তদারকি করতেন বলে জানা যায়। ফলে সেতুটি বেশ শক্তিশালী হয়েছিলো।

২০১০ থেকে ২০১৪ সালে করালগ্রাসী যমুনা তীব্র ভাঙন তান্ডবলীলা চালায়। যার দরুন ২০১৩ সালে সেতুটি সম্পুর্ন নদীর মধ্যে চলে যায়। সেই থেকে সেতুটি আপন শক্তিতে দাড়িয়ে ছিলো করালগ্রাসী যমুনার বুকে। প্রায় ৫ বছর আগে সেতুর কাছ দিয়ে বিশাল আয়তনের চর জাগার কারণে সেতুটি আবারও শক্ত অবস্থানে দাঁড়ায় কিন্তু গত দুই বছর আগে চরের মাঝখান দিয়ে খালের মতো ছোট নদী তৈরি হয় সেতুটিকে মাঝে ফেলে। সেই খালের মতো নদীটি চৌহালী দক্ষিনাঞ্চলের পূর্ব পাড়ে চলমান বন্যায় বড় নদী হয়ে প্রায় ১০০ ফুট গভীর হয়, ফলে ভারসাম্য হারিয়ে নদীতেই ডুবে যায় সেতুটি।

চরসলিমাবাদ গ্রামের বাসিন্দা মেহেদী হাসান সায়মন বলেন- যমুনায় যখনি দেখতাম এই ব্রিজটি এখনো দাড়িয়ে আছে তখন অতীত স্মৃতি মনে পরে যেত। এই ব্রিজ দিয়ে দিনরাত কতশত যানবাহন চলাচল করতো। এই রাস্তাকে কেন্দ্র করে হাট-ঘাট, স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যমযমাট অবস্থানে চলে এসেছিলো।

ঢাবি শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা মো. সোলায়মান হোসেন বলেন- ব্রিজটি বিলীন হওয়ায় খুব কষ্ট লাগছে। যে রাস্তায় ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়েছিলো সেই রাস্তার উসিলায় হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছিল। কিন্তু দুঃখের বিষয় সারাদেশে সরকারের উন্নয়নের জোয়ার বইলেও গত ১০-১২ বছরে চৌহালীর কোনো উন্নয়ন হয়নি।

(আই/এসপি/জুন ২৩, ২০২২)