কাজী হাসান ফিরোজ, বোয়ালমারী : ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে প্রকাশ্যে দিবালোকে ডাবল মার্ডারকারীদের স্বপক্ষে মানব বন্ধন করে মানবতাবিরোধীতার এক নিকৃষ্ট উদাহরণ সৃষ্টি করা হয়েছে। 

বোয়ালমারী উপজেলাধীন ঘোষপুর ইউনিয়নের গোহাইলবাড়িতে গত ঈদুল ফিতরের দিন উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আরিফুর রহমানের নেতৃত্বে উপজেলা আওয়ামীলীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যান সম্পাদক এবং তার সঙ্গীদের উপর আক্রমণ চালিয়ে দুইটি তাজাপ্রাণের রক্তে ঈদুল আযহার আনন্দ ম্লাণ করে দেয়। পুরো ইউনিয়নে শোকের ছায়া নেমে আসে।বিগত বিএনপি শাসনামলে মো. আরিফুর রহমান এবং তার পরিবারের বিপক্ষে গোহাইলবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বঙ্গবন্ধুর ছবি নামানো এবং ভাংচুরের অভিযোগ ছিলো, সেই খুনিদের পক্ষে থেকে খুনের নেতৃত্ব ও মানব বন্ধন করে এলাকায় সাড়া জাগিয়েছেন, উপজেলা আওয়ামীলীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ও ঘোষপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এস, এম, ফারুক আহমেদ।

বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার সাতৈর বাজারে ঘোষপুর সড়কে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। ভাড়াটিয়া লোক দিয়ে এ মানববন্ধন করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সাবেক চেয়ারম্যান এস এম ফারুক আহমেদ , ঘোষপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক রাজু আহমেদ রাজা, ৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মো. ইজাজুল করিম মিন্টু, ঘোষপুরের বাসিন্দা মো. ছিদ্দিকুর রহমান প্রমুখ।

এলাকা সূত্রে জানা যায়, ডাবল মার্ডারের আসামীরা উচ্চ আদালত থেকে সাময়িক জামিন এনে হত্যা মামলাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে এবং দোষীদের রক্ষা করতে এ মানববন্ধন করেছে। মানববন্ধনে মামলার আসামী ও তাদের সঙ্গীরা মানববন্ধনে মামলার বাদি সম্পর্কে মিথ্যা বক্তব্য দিয়েছেন।

উল্লেখ্য উপজেলার ঘোষপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান, উপজেলা কৃষকলীগের সাবেক সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধের স্থানীয় গোহাইলবাড়ি ক্যাম্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিন আহমেদের (৯৪) সাথে গোহাইলবাড়ি গ্রামের সাবেক কৃষি কর্মকর্তা মৃত বজলুর রহমান ওরফে বজলু খালাসির; এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিলো।

গত ১৬ এপ্রিল স্থানীয় গোহাইলবাড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সে বিরোধ পুনরায় চাঙা হয়। আলাউদ্দিন আহমেদের ছেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক মোস্তফা জামান সিদ্দিকী ও মৃত বজলুর রহমান ওরফে বজলু খালাসির ছেলে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আরিফুর রহমানের মধ্যে দুই প্যানেলে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে মোস্তাফার প্যানেল বিজয়ী হয়ে পুনরায় তিনি সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই দুই পরিবারের মধ্যে বিরোধ তীব্র আকার ধারণ করে।

গত ঈদুল ফিতরের দিন (৩ মে) দুপুরের দিকে মোস্তফা জামানসহ নিহত-আহতরা গোহাইলবাড়ি বাজারের নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বসে চা খাচ্ছিলো। এ সময় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আরিফুর রহমান ও এস,এম, ফারুক আহমেদ হতাহতদের উপর রামদাসহ দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালিয়ে মোস্তফার চাচাতো ভাই আকিদুল মোল্যা (৪৫) ও কৃষকলীগ নেতা খায়রুল শেখকে (৪৭) দিবালোকে হত্যা করে।

গোলাম মোস্তফা জামান সিদ্দিকী বাদি হয়ে ৮১ জনের নাম উল্লেখ পূর্বক আরো ৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

(কেএফ/এসপি/জুন ২৩, ২০২২)