সোহেল রানা, শেরপুর : শেরপুর জেলার শ্রীবরদী উপজেলাতে বোরকা পড়ে ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে ৩ জনকে হত্যা করেছে মিন্টু মিয়া (৪০)। ২৩ জুন বৃহস্পতিবার রাত ৮ টার দিকে শ্রীবরদী উপজেলার কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের পুটল গ্রামে মিন্টু মিয়া শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে তার স্ত্রী মনিরা বেগম (৩৫), শাশুড়ি শেফালী বেগম (৫০) ও জেঠা শ্বশুর আলহাজ্ব নুর মোহাম্মদ ওরফে মাহামুদ (৬৫) কে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে। এঘটনার পরপরই পুলিশ সাড়াশি অভিযান চালায়। পরদিন ২৪ জুন শুক্রবার ভোরে পুটল গ্রামের একটি গাছের উপর থেকে ঘাতক জামাই মিন্টু মিয়াকে পুলিশ আটক করে।

এ ঘটনায় আহত হয়েছে নিহত মনিরার বাবা মনু মিয়া (৬০), ছোট ভাই শাহাদাত হোসেন (২৫) ও নিহত নুর মোহাম্মদের স্ত্রী সাহেরা খাতুন (৫৫) গুরুতর আহত হয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। ২৪ জুন শুক্রবার নিহত মনিরার ছোট বোন মিনারা বাদী হয়ে শ্রীবরদী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। এ নিয়ে এলাকায় আতংক বিরাজ করছে।

নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, পুটল গ্রামের মনু মিয়ার মেয়ে মনিরা বেগমের সাথে পার্শ্ববর্তী গেরামারা গ্রামের হাই মদ্দিনের ছেলে মিন্টু মিয়ার বিয়ে হয়। তাদের ৮ম শ্রেণী পড়ুয়া এক ছেলে ও ৬ষ্ঠ শ্রেণী পড়ুয়া এক মেয়ে সন্তান রয়েছে। বিবাহিত জীবনে তাদের দাম্পত্য কলহ লেগেই থাকতো। কিছুদিন আগে মনিরা বাবার বাড়িতে চলে আসে। এরই জের ধরে মিন্টু ২৩ জুন বৃহস্পতিবার রাত ৮ টার দিকে বোরকা পড়ে দা নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে হামলা করে। প্রথমে পাকের ঘরে গিয়ে স্ত্রী মনিরা বেগমকে কুপিয়ে হত্যা করে। এ সময় বাঁধা দিতে গেলে শাশুড়ি শেফালী খাতুন, শ্বশুর মনু মিয়া, শ্যালক শাহাদাত, জেঠা শ্বশুর নুর মোহাম্মদ, জেঠি শাশুড়ি সাহেরা খাতুনকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী বকশিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে শেফালী বেগম ও নুর মোহাম্মদকে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

আহত অন্যান্যদেরকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। ঘটনার পরপরই পুলিশ রাতভর অভিযান শুরু করে। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে শুক্রবার ভোরে মিন্টু মিয়াকে একটি গাছের উপর থেকে আটক করে পুলিশ।

পুলিশ সুপার মো. হাসান নাহিদ চৌধুরী ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিলুফা আক্তার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। শ্রীবরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বিপ্লব কুমার বিশ্বাস বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এঘটনায় নিহত মনিরার ছোট বোন মিনারা বাদী হয়ে শ্রীবরদী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে।

(এসআর/এসপি/জুন ২৪, ২০২২)