চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি : কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে গরু, মহিষ, খাসি, ভেড়া কোরবানি দেবার পর মাংস কাটতে নানান জিনিস প্রয়োজন হয়। এরমধ্যে অন্যতম অতি প্রয়োজনীয় একটি অনুসঙ্গ তেঁতুল কাঠের গুঁড়ি ‘খ্যাটে’। নিজের মৌসুমী ব্যবসা আর চাহিদার কারণে রাস্তার পাশেই তেঁতুল কাঠের খ্যাটে (মাংস চুড়নো) সুন্দর করে সাজিয়ে বসে আছেন তায়জুল ইসলাম (৪৬)। সাথে ছেলে ও স্ত্রীও আছেন। কোরবানীর ঈদ এলেই তিনি এক সপ্তাহ আগ থেকেই মাংস কাটার অনুসঙ্গ এই খ্যাটে (কাঠের গুড়ি) বানিয়ে বিক্রি শুরু করেন। বিগত ১৩ বছর ধরে তিনি ব্যতিক্রমী এই ব্যবসাটি করছেন। অবশ্য তিনি একজন জ্বালানী কাঠ ব্যবসায়ী।

পাবনার চাটমোহর পৌরসভার বালুচর মহল্লার বাসিন্দা পৌর ভূমি অফিসের পেছনে পৌরসভার সাইকেল হাটের সড়কের পাশেই খড়ির আড়ৎ রয়েছে। তায়জুল ইসলামের আরতের নাম ‘তাজ আড়ৎ’।

তায়জুল জানান, অনেক দূরের গ্রাম এলাকা থেকে তেঁতুল গাছ কিনে কেটে আনতে হয়। এখন তেঁতুল গাছ তেমন পাওয়া যায় না। দামটাও বেশী পড়ে। স’মিলে কেটে ছোটছোট গুঁড়ি বানাতে হয়। প্রতি বছরের মতো এবার তিনি মাঝারী তেঁতুল গাছ কিনে স’মিলে কেটে খ্যাটে বানিয়ে বিক্রি করছেন।

ছোট-বড়-মাঝারি মিলিয়ে মোট শতাধিক পিস খ্যাটে হয়েছে। গাছের গোড়ার বড় খ্যাটে একটা ৫শ’ টাকা। গাছের মাঝের অংশের খ্যাটে ২শ’ টাকা এবং গাছের আগার ছোটটা ১শ’ থেকে দেড়শ’ টাকা। এগুলো বিক্রি হলে বেশ কিছু মুনাফা হয় বলে তিনি জানান।
তারা জানান, বড় খ্যাটেয় গরু-মহিষ আর ছোট খ্যাটেয় খাসি-ভেড়া কাটা হয়। মাংস কাটতে তেঁতুল কাঠের খ্যাটের বিকল্প নেই।
ক্রেতা জামাল উদ্দিন জানান, তেঁতুল কাঠের খ্যাটেয় মাংস কাটা ভালো হয়। খ্যাটে ভালো না হলে মাংস নষ্ট হয়।

তায়জুল জানান, শহরের অনেকেই অর্ডার দিয়ে রেখেছেন। ঈদের আগের দিন নিয়ে যাবেন। খ্যাটের পামাপাশি কোরবানি ঈদে অন্যতম অনুসঙ্গ চাকু, বটি, চাপাতি। তাই কামারশালায় ভীড় পড়েছে। কেউ নতুন কেউবা পুরনোগুলো কামারের কাছে ঠিকঠাক করে নিচ্ছে। ঈদ আসলে তাই মৌসুমী পেশার মানুষ জীবিকার সন্ধানে দিনরাত পরিশ্রম করে বাড়তি আয়ের জন্য।

(এসএইচএম/এএস/অক্টোবর ০২, ২০১৪)