স্পোর্টস ডেস্ক : মাঝে-মধ্যে দু’একটি টেস্টে বাংলাদেশের ব্যাটাররা ভালো করছে, ভালো ইনিংস খেলছে। যে কারণে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে জয়ও পেয়েছিল তারা। কিন্তু সেটা খুবই কম, কালেভদ্রে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই, ঘরের মাঠ কিংবা পরের মাঠ- সব জায়গাতেই টেস্টে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের একই চিত্র।

বাংলাদেশের ব্যাটারদের ধৈর্য্য কম। লম্বা সময় উইকেটে টিকে থাকতে পারে না। তাড়াহুড়া করতে গিয়ে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসে। সেন্ট লুসিয়ার যে উইকেটে বাংলাদেশ ২৩৪ রানে অলআউট হয়েছে, সে উইকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এরই মধ্যে ১০৬ রানের লিড নিয়েছে। কাইল মায়ার্স রয়েছেন ১২৬ রানে অপরাজিত।

সেন্ট লুসিয়া টেস্টের দুইদিন পার হওয়ার পর বাংলাদেশ দলের কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো মনে করছেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজ বাংলাদেশকে শাস্তিই দিচ্ছে।

দ্রুত ৪ উইকেট পড়ার পর ভেঙে পড়েনি ক্যারিবীয়রা। বরং ইনিংস মেরামত করে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। কাইল মায়ার্স, জার্মেইন ব্ল্যাকউড কিংবা জশুয়া ডা সিলভারা দেখালেন কিভাবে ব্যাটিং করতে হয়।

টাইগারদের প্রধান কোচ রাসেল মনে করেন, বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের কী করা উচিত, সেটি দেখাচ্ছেন মায়ার্সরাই। চট্টগ্রামে মায়ার্স যা করেছিলেন, সেন্ট লুসিয়ায় যা করলেন- এমন কিছু বাংলাদেশের কেউ করতে পারছেন না, সেটিও মনে করিয়েছেন তিনি।

দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে ডমিঙ্গো দুই দলের পার্থক্য দেখিয়ে বলেন,‘দুই দলের পার্থক্যটা মূলত ওই ব্যাটিংয়েই বেশি ধরা পড়ছে। ব্যাটিং ও বোলিং নিয়ে কঠিন প্রশ্ন তোলার আছে। কারণ এটা ২৩০ এর উইকেট না। ওয়েস্ট ইন্ডিজ আমাদের দেখিয়ে দিচ্ছে কেনো ওরা এই সংস্করণে আমাদের চেয়ে ভালো দল। ওদের একজন একশ রানে অপরাজিত আছে। ওদের সামনে বড় রান করার সুযোগ আছে। কারণ ওরা জুটি গড়তে সক্ষম হয়েছে, লম্বা সময় ব্যাটিং করেছে। ওরাই দেখাচ্ছে আমাদের কী করা উচিত।’

কাইল মায়ার্স কিভাবে ব্যাট করলেন? ডমিঙ্গো জানালেন সেটাও, ‘এই ম্যাচে এখনো অনেক খেলা বাকি। অথচ মায়ার্সকে দেখবেন ইতিবাচক ব্যাটিং করেছে। কাভারে অনেক রান করেছে সে। নিজের ব্যাটিং পরিকল্পনা অনুযায়ী যতক্ষণ পেরেছে খেলেছে। ভাগ্যও তার সঙ্গে ছিল। কিছু এজ স্লিপ ফিল্ডারের মাথার ওপর দিয়ে গিয়েছে। এক-দুটি বল গিয়েছে স্লিপের পাশ দিয়ে। কিন্তু নিজের ভাগ্য তো নিজেকেই গড়তে হয়। সে দারুণ ইন্টেনসিটি দেখিয়েছে। বাজে বলকে শাসন করেছে।’

মায়ার্সের কাছ থেকে শিক্ষা নিতে পারে বাংলাদেশের ব্যাটাররা। সে কথা জানিয়ে ডোমিঙ্গো বলেন, ‘আমাদের দলের অনেক ক্রিকেটার ফর্ম খুঁজে বেড়াচ্ছে, রানের পেছনে ছুটছে। এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার একটাই উপায়, লম্বা সময় ধরে ব্যাট করা। অনেক ৩০-৪০ রানের ইনিংস হচ্ছে। কেউ কেউ ৫০ রান করছে। তবে কাইল মায়ার্স যা করছে, সেটা কেউই করছে না। কারণ এটাই ২৩০ আর ৪০০ রানের মধ্যে পার্থক্য। আমাদের ওর মতো ১২০ রানের ইনিংস খেলতে হবে।’

চট্টগ্রাম টেস্টে মায়ার্স কী করেছিলেন সেটা ভোলেননি ডোমিঙ্গো। তিনি বলেন, ‘ওরা আমাদের বিপক্ষে ৪০০ (৩৯৪) রান তাড়া করেছিল চট্টগ্রামে। মায়ার্স ২০০ (২১০*) রান করেছিল সেদিন। আমরা এ ধরনের ইনিংস পাচ্ছি না। ছেলেদের জন্য এটা অনেক বড় শিক্ষা। টেস্ট ম্যাচ ক্রিকেট কঠিন। যখন আপনি যতটা দীর্ঘ সময় ব্যাট করা উচিত, ততটা করছেন না, তখন ভালো দল আপনাকে শাস্তি দেবে। এখন আমাদের ওরা শাস্তিই দিচ্ছে।’

(ওএস/এএস/জুন ২৬, ২০২২)