শিমুল সাহা, লক্ষ্মীপুর : লক্ষ্মীপুরে একটি মাদ্রাসার অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকুরীর আশায় ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে তিন লাখ টাকা ঘুষ দেন এক চাকুরীপ্রার্থী। চাকুরী না পাওয়ায় এখন সেই টাকা ফেরত চাচ্ছেন চাকুরীপ্রার্থী। তবে টাকা ফেরত না দিয়ে অভিযুক্ত অধ্যক্ষ উল্টো গালমন্দ করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী চাকুরীপ্রার্থী প্রতিকার চেয়ে শিক্ষা কর্মকর্তা ও মাদরাসার সভাপতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

ভুক্তভোগী ওই প্রার্থীর নাম মো. ইকবাল হোসেন। তিনি সদর উপজেলার মান্দারী ইউনিয়নের গন্ধর্ব্যপুর গ্রামের মো. হেদায়েত হোসেনের ছেলে।

জানা গেছে, সম্প্রতি গন্ধর্ব্যপুর ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার জন্য অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। এতে ৯ জন প্রার্থী আবেদন করেন। গত ১৮ জুন মাদ্রাসাতে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে রিয়াজ হোসেন নামে এক ব্যক্তিকে ওই পদে মনোনীত করা হয়।

তবে ওই পদের প্রার্থী ইকবাল হোসেন অভিযোগ তুলেছেন, মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. ওমর ফারুক তাকে চাকুরী দেবে বলে তার কাছ থেকে দুই দফায় ৩ লাখ টাকা নিয়েছেন। কিন্তু অধ্যক্ষ তাকে চাকুরী দিতে পারেন নি। ফলে তিনি অধ্যক্ষের কাছে ঘুষের টাকা ফেরত চেয়েছেন। এতে উত্তেজিত হয়ে উঠেন অধ্যক্ষ। টাকা না দিয়ে উল্টো তাকে গালমন্দ করেন।

ইকবাল হোসেনের পিতা হেদায়েত হোসেন বলেন, গত এক বছর থেকে ওমর ফারুক আমার ছেলেকে চাকুরী দেওয়ার আশ্বাস দেন। এ জন্য তিনি ৩ লাখ টাকা দাবি করেন। আমি স্থানীয় শামছুদ্দিন ও মুনসুরের কাছ থেকে টাকাগুলো সুদের উপর ধার করে ওমর ফারুকের হাতে তুলে দিই। কিন্তু তিনি আমার ছেলেকে চাকুরী দিতে পারেন নি, টাকাও ফেরত দিচ্ছেন না। যাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছি, তারা এখন আমাকে টাকার জন্য চাপ দিচ্ছে। কিন্তু অধ্যক্ষ ওমর ফারুক টাকা ফেরত না দেওয়ায় পাওনাদারদের টাকা ফেরত দিতে পারছি না।

স্থানীয় শামছুদ্দিন বলেন, ইকবালের বাবা আমার কাছ থেকে অধ্যক্ষকে চাকুরী বাবদ দেওয়ার জন্য দুই লাখ টাকা নিয়েছেন। একই কথা জানান মুনসুর। তিনি বলেন, তার কাছ থেকেও এক লাখ টাকা নিয়েছে অধ্যক্ষ ওমর ফারুককে দেওয়ার জন্য।

এ বিষয়ে জানতে সরেজমিনে উক্ত মাদ্রাসায় গেলে অধ্যক্ষ ওমর ফারুককে পাওয়া যায়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায় নিয়োগ পরীক্ষার পরদিন থেকে এখন পর্যন্ত তিনি মাদ্রাসায় উপস্থিত হননি। তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে ফোন করলে তিনি জানান, তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক।

মাদরাসার সভাপতি অ্যাডভোকেট রহমত উল্যাহ বিপ্লব বলেন, চাকরি দেওয়ার জন্য অধ্যক্ষ কারো কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন কিনা- সেটা আমার জানা নেই। তবে স্বচ্ছভাবে পরীক্ষার মাধ্যমে একজনকে নিয়োগের জন্য মনোনীত করা হয়েছে।

(এস/এসপি/জুন ২৬, ২০২২)