জে.জাহেদ, চট্টগ্রাম : পদ্মাসেতু নির্মাণে অভাবনীয় সাহস ও সাফল্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘বঙ্গমুকুট’ উপাধি দিয়েছেন চট্টগ্রামের নাগরিক সংগঠক, পেশাজীবী নেতা ও চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী।

গত শনিবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এক আয়োজনে অনলাইন ভিত্তিক নিউজ ব্যাংক টিভির চট্টগ্রাম স্টুডিও থেকে গতরাত বারোটার পর লাইভে এসে সংবাদ বিশ্লেষণকালে ‘বঙ্গমুকুট’ উপাধি দেন এই নাগরিক সংগঠক।‌ চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এক আলোচনা সভায়ও আনুষ্ঠানিক ভাবে এই উপাধি দেন তিনি।

উল্লেখ্য, রিয়াজ হায়দার চৌধুরী চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের-বিএফইউজের সদ্য সাবেক সহ-সভাপতি এবং চট্টগ্রাম নাগরিক উদ্যোগেরও আহ্বায়ক।একই সাথে তিনি পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে সদ্য সাবেক সিন্ডিকেট সদস্য রিয়াজ হায়দার চৌধুরী।

সাংগঠনিক দক্ষতার কারণে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন-চসিক একুশে পদকপ্রাপ্ত সংগঠক তিনি। প্রধানমন্ত্রী যে সময় পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেছিলেন, ঠিক সে সময়ে চট্টগ্রামে সাংবাদিকদের সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়। চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে বিশেষ আলোচনা সভায় চট্টগ্রামের এই সাংবাদিক নেতা এই সেতু নির্মাণের আগেই ষড়যন্ত্রের অভিযোগ প্রক্রিয়ায় জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত প্রফেসর ড. ইউনুসের বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণেরও দাবি জানান।

এই পেশাজীবী নাগরিক সংগঠক বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে ও সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ড. ইউনুসের গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পদের জন্য চাপ প্রয়োগ করে পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রক্রিয়ার অর্থ বরাদ্দ বাতিলে সক্রীয়তার অভিযোগ করেন।

প্রধানমন্ত্রী কোনো হাওয়া থেকে পাওয়া অভিযোগ করেননি। সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ নিশ্চয়ই ওনার কাছে আছে। চট্টগ্রামের সন্তান হিসেবে তাই বুকে হাত রেখে বলতে চাই, এধরনের রাষ্ট্রিয় স্বার্থবিরোধী কাজে যিনি বা যারাই জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে আরো ‘উন্নয়ন বিরোধী জাতীয় শত্রু’ তৈরি হবার আশঙ্কা রয়েছে।

প্রেসক্লাব সভাপতি আলহাজ্ব আলী আব্বাস এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভাটিতে পেশাজীবী-সাংবাদিক নেতা রিয়াজ হায়দার চৌধুরী ছাড়াও অন্য সাংবাদিক নেতাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএফইউজের বর্তমান সহ-সভাপতি শহীদ উল আলম, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম, প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সহ সভাপতি সালাউদ্দিন মোহাম্মদ রেজা, চট্টগ্রাম সাংবাদিক হাউসিং সোসাইটির সাবেক চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা মাঈনুদ্দিন কাদেরী শওকত, বিএফইউজে এর সাবেক সহ-সভাপতি মোশতাক আহমেদ ও সাবেক যুগ্ম মহাসচিব আসিফ সিরাজ,প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি কলিম সরোয়ার ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফারুক ইকবাল।‌ সভা পরিচালনা করেন প্রেসক্লাব যুগ্ম সম্পাদক নজরুল ইসলাম। আলোচনা শেষে শোকরানা দোয়া মাহফিল ও বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।

আলোচনাকালে প্রেসক্লাব সভাপতি আলী আব্বাস বহুল কাঙ্ক্ষিত স্বপ্নের পদ্মা সেতুটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে নামকরণের দাবি জানান। ‌এতে বক্তব্য দানকালে সাংবাদিক ও পেশাজীবী নেতা রিয়াজ হায়দার চৌধুরী নির্মাণ প্রক্রিয়ার সাথে বিশেষ করে চট্টগ্রামের সাংবাদিক সমাজের গৌরবোজ্জ্বল সমর্থনের কথা উল্লেখ করে ২০১২-১৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি( রিয়াজ) চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক থাকাকালীন নির্বাহী কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে পদ্মা সেতু নির্মাণে চট্টগ্রামের সাংবাদিকদের একদিনের বেতনের টাকা প্রদানের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলেন’ বলে উল্লেখ করেন।‌

তিনি বলেন, ‘বিষয়টি পরবর্তীতে ঢাকায় সাংবাদিকদের আরেক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে তাঁকে এই সেতু নির্মাণে চট্টগ্রামের সাংবাদিকদের সমর্থনের কথাও উল্লেখ করা হয়েছিল। যদিও পরবর্তীতে এই টাকা আর দিতে হয়নি । মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব ক্যারিশমায় এই সেতু নির্মাণে যুগান্তকারী পদক্ষেপ নেন।

প্রধানমন্ত্রীর এই সাহসী পদক্ষেপের সাথে চট্টগ্রামের সাংবাদিক সমাজ সেই শুরু থেকেই সমর্থন দিয়ে আসছে’ বলে উল্লেখ করেন এই সাংবাদিক নেতা। প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘায়ু কামনা করে জাতির পিতার প্রতি বিশেষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করে তিনি বলেন,” এই মহান নেতার জন্ম না হলে আজ তাঁর রক্ত এবং আদর্শের উত্তরসূরির হাত ধরে পদ্মা সেতু প্রাপ্তির সুফল এদেশের মানুষের হতো না। ‌’

(জেজে/এসপি/জুন ২৬, ২০২২)