ইমরান হোসাইন, সিরাজগঞ্জ : নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত বাঙ্গালির স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধনের মাহেন্দ্রক্ষনে স্বাক্ষী হতে অনেকেই পদ্মাপাড়ে এসেছিলেন দুর-দুরান্ত থেকে। স্বপ্নের সেতু উদ্বোধনে যখন চলছে জমকালো উৎসব, সেতু ঘিড়ে দর্শনার্থীদের বাধভাঙ্গা উচ্ছাস ঠিক তখনি মাঝ নদীতে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে পানিতে ভাসতে থাকে একদল দর্শনার্থী। 

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে সেপথে ফিরতে থাকা পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার অপু’র বিচক্ষনতায় প্রানে বেচেছেন প্রমত্তা পদ্মায় ডুবতে যাওয়া দর্শনার্থীরা। নিজে উদ্ধার কাজে অংশ নিয়ে দুর্ঘটনার শিকার দর্শনার্থীদের পাড়ে তুলে নিয়ে আসা, প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়াই শুধু নয় বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মানবিকতার সৈনিক, জনপ্রশাসনের সিনিয়র কর্মকর্তা, বাংলাদেশ এ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস এসোসিয়েশনের সভাপতি কবির বিন আনোয়ার নিশ্চিত করেছেন দুর্ঘটনায় অসুস্থ হয়ে পড়া দর্শনার্থীদের সুচিকিৎসার, খোঁজ রেখেছেন বাড়ি ফেরা অবধি।

শনিবার দুপুরে সেতু সংলগ্ন পদ্মা নদীর মাওয়া পয়েন্টে এ ঘটনাটি ঘটে।

ইসাবেলা ফাাউন্ডেশনের চিফ কো-অর্ডিনেটর, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা তোফায়েল আহম্মেদ জানান, পদ্মা সেতু উদ্বোধন শেষে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সচিব ও ইসাবেলা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান কবির বিন আনোয়ার অপু স্যারের সাথে আমরা একটি স্পিডবোটে ফিরছিলাম। এসময় মাঝ নদীতে বেশ কিছু মানুষ ভাসতে থাকা লক্ষ করেন কবির বিন আনোয়ার।

তোফায়েল বলেন, ওরা কারা, কি করছে মাঝ নদীতে, কবির বিন আনোয়ার স্যার আমাদের এমন প্রশ্ন করলে ওরা মাছ ধরছে বলে আমরা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু ভাসতে থাকা লোকজনের আশেপাশে কোন জাল বা নৌযান না দেখতে পেয়ে সিনিয়র সচিব মহোদয় তার বিচক্ষনতায় বুঝতে পারেন কোন দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন তারা। তাৎক্ষনিকভাবে স্পিডবোট সেদিকে নেবার নির্দেশনা দেন, সেখানে পৌছার পর তারা প্রকৃতই দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে বুঝতে পেরে নিজেই সকলকে সাথে নিয়ে উদ্ধার কাজে অংশ নেন। তাকে বহনকারি স্পেডবোটটি ছোট হওয়ায় প্রাথমিকভাবে ১০ জনকে উদ্ধার করে পারে আনার পাশাপাশি দ্রæত পানি উন্নয়ন বোর্ডের আরেকটি স্পিডবোট ঘটনাস্থলে আনা হয়। সেটি দিয়ে আরো ১২ জনকে উদ্ধারে চালানো উদ্ধার অভিযানও নিজে তদারকি করেন কবির বিন আনোয়ার।

তোফায়েল আহম্মেদ আরও জানান, মোট ২২ জনকে উদ্ধার করে পাড়ে আনার পর তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। বেশ কয়েকজনকে পাঠানো হয় শ্রীপুর হাসপাতালে। প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া থেকে শুরু করে সুচিকিৎসা নিশ্চিত ও বাড়িফেরা পর্যন্ত সার্বক্ষনিক খোজখবর রাখেন সিনিয়র সচিব মহোদয়। উনার মানবিকতা আসলেই অনন্য।

এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জের কৃতিপুরুষ, পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সচিব ও ইসাবেলা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান কবির বিন আনোয়ার অপু বলেন, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে দুর্ঘটনা স্থল দিয়ে আমি আসছিলাম। মাঝ পদ্মায় পানিতে ডুবন্ত মানুষ, আশেপাশে কোন নৌযান দেখতে না পেয়ে সন্দেহ হয় তারা দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। সাথে সাথে আমরা তাদের সহায়তা করতে এগিয়ে যাই। মোট ২২ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। এরা ভোলার চরফ্যাশন থেকে এসেছিল পদ্মা সেতু দেখতে।

(আই/এসপি/জুন ২৬, ২০২২)