শেরপুর প্রতিনিধি : শেরপুরে এক ব্যাবসায়ীকে পিটিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রেজাসহ ১১জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ৫/৬জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছে ভুক্তভোগী ব্যাবসায়ীর বড় ভাই। রবিবার রাতে আহত ব্যাবসায়ীর বড় ভাই কামাল মিয়া শেরপুর সদর থানায় ওই মামলা দায়ের করার পর ২৪ঘন্টায়ও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। তবে আসামী ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

মামলা সূত্রে জানা যায়, শনিবার (২৫ জুন) রাতে শহরের নিউ মার্কেট এলাকায় বাদীর ছেলে ইন্টারনেট ব্যাবসায়ী কারিমুল হাসান জিহাদ ও তার ব্যাবসায়ী পার্টনার তৌফিকুর রহমান তারিফের উপর অতর্কিত হামলা করে ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীরা। খবর পেয়ে জিহাদের চাচা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে স্থানীয়দের নিয়ে হামলাকারীদের ফেরাতে চেষ্টা করলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে চাচা আব্দুল আউয়াল শেখ কে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এই ঘটনার পরদিন রাত সাড়ে ৮টায় শহরের নবীনগর বাসস্ট্যান্ডে আব্দুল আউয়াল এর ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান জিহাদ ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপে ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রেজা তার অনুসারীদের নিয়ে প্রথমে গালিগালাজ করতে থাকে, সেসময় ভুক্তভোগী ব্যাবসায়ী আব্দুল আউয়াল প্রতিবাদ করলে রেজা তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেন। পরবর্তীতে রেজার সাথে থাকা অনুসারীরা দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও রড দিয়ে আহত করে। এসময় স্থানীয়রা তাদেরকে ফেরাতে চেষ্টা করলে তাদেরকেও অস্ত্র দেখিয়ে ভয় ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছে বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

পরে ব্যাবসায়ী আউয়াল কে স্থানীয়রা উদ্ধার করে শেরপুর জেলা হাসপাতালে নিলে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন জরুরী বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক। সোমবার দুপুরে তার অবস্থার আরো অবনতি হলে মমেক হাসপাতাল থেকে আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়।

আহত ব্যাবসায়ীর বড় ভাই কামাল মিয়া বলেন, ঘটনার পর মামলা করলেও এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার না করায় ঝুঁকিতে রয়েছে ভুক্তভোগীর পরিবার। এদিকে আমার ভাইও মৃতু্যর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। কখন কি হয়ে যায়, বলা যাচ্ছে না। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠ বিচার প্রার্থনা করছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, রেজা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন অপকর্মের সাথে সরাসরি জড়িত হয়ে পড়ে। নিউমার্কেটের মতো জায়গায় অফিস নিয়ে প্রতি মাসেই নিউমার্কেটে বিভিন্ন কোন্দলে সরাসরি নেতৃত্ব দিয়েছে রেজা। ক্ষমতার অপব্যবহার ও ছাত্রলীগের পদকে কাজে লাগিয়ে সে যা করেছে, এর একটা বিচার হওয়া উচিৎ।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শেরপুর সদর থানার সাব-ইন্সপেক্টর সুমন দেবনাথ বলেন, মামলা গ্রহণের পর থেকেই পুলিশের পক্ষ থেকে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে। শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনসুর আহমেদ বলেন, আহতের বড় ভাই মামলা করেছে। ইতোমধ্যে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ অভিযান শুরু করেছে।

তবে এ বিষয়ে শেরপুর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রেজার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

(এসআর/এসপি/জুন ২৮, ২০২২)