ডেস্ক রিপোর্ট, ঢাকা : রূপবিশেষজ্ঞ তানজিমা শারমিন মিউনি বলেন, “পহেলা ফাল্গুনে বেড়াতে বের হলে নিজের সাজটাও যদি প্রকৃতির সঙ্গে মানিয়ে করা যায়, তাহলে বসন্ত আরও বেশি উপভোগ করা যাবে।”

বিউটি সেলুন হেয়ারোবিক্সের কর্ণধার মিউনি আরও বলেন, “বাসন্তী রংয়ে নিজেকে দেখতে হলে সাজের দিকে অবশ্যই গুরুত্ব দিতে হবে। দিনের বেলা বাইরে গেলে মুখে হালকা করে ফেইসপাউডার লাগিয়ে নিন। কন্সিলার দিয়ে মুখের ছোটখাটো দাগ ঢেকে দিতে পারেন। মুখে হালকা ব্লাশন ব্যবহার করুন। লাল ছাড়াও সাজের সঙ্গে মানিয়ে গেলে কমলা লিপস্টিক দিয়েও ঠোঁট জোড়া রাঙিয়ে নিতে পারেন। চোখে হালকা আই শ্যাডো দিন। এক্ষেত্রে ব্রাউন, গোল্ডেন, কপার ইত্যাদি রংগুলো বেশি ভালো লাগবে।”

ফুলের সাজ

ফাগুন মানেই গাঁদাফুলের সাজ। কারণ রংটা তার বাসন্তী। তাছাড়া এই সময় গাঁদাফুল সবচেয়ে সহজলভ্য। বসন্তের সকাল উৎসবমুখর করতে চাইলে, গাঁদাফুল আগের দিন রাতেই কিনে রাখুন। নইলে পহেলা ফাল্গুনের ভোরে খোঁপা গাঁদাফুলের মালায় সাজাতে একটু বেশিই খরচ হয়ে যেতে পারে।

খুব বেশি ফুল দিয়ে নিজেকে ভারি করে তোলার দরকার নেই। খোঁপা কিংবা হাতে গাঁদা ফুলের কিঞ্চিৎ ছোঁয়া বলে দিবে আজ পহেলা ফাগুন।

যারা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ফাগুন-উৎসবে থাকতে চান, তারা সঙ্গে শীত কাপড় নিতে ভুলবেন না। সন্ধ্যে নাগাদ প্রকৃতি কিছুটা শীতল হয়ে ওঠে।

চুলের বিনুনি

বসন্তের সাজে বেণির জুড়ি নেই। চুল ভালো করে শুকিয়ে নিয়ে কপালের সামনের কিছু চুল আলাদা করুন। আর পেছনের চুলে হালকা পাফ করে নিন। সামনের চুলগুলো সাজাতে পারেন ইচ্ছেমতো। দু’পাশের চুল টুইস্ট করে পেঁচিয়ে ক্লিপ দিয়ে কানের পাশে আটকে দিতে পারেন। আবার সামনের সব চুল অনেকগুলো ভাগ করে অল্প চুল নিয়ে টুইস্ট করে পাফ করা চুলের ওপর দিয়ে মাথার একেবারে পেছনে আটকে দিন। টুইস্ট করতে না চাইলে পাশে সিঁথি করে স্প্রে দিয়ে চুল একটু গুছিয়ে কানের দু’পাশে আটকে দিতে পারেন। পেছনের চুল ভালো করে আঁচড়ে বেণি করুন। চুল ছোট হলে মন খারাপ করার কিছু নেই। টারসেল ব্যবহার করুন বেণিতে। পছন্দসই ফুল নিয়ে কানের একপাশে গুঁজে দিন। আর ছোট ছোট ফুল বসিয়ে দিন পুরো বেণিতে।

খোঁপায় ফুলের শোভা

সামনের চুলগুলো কার্লার দিয়ে কোঁকড়া করে নিতে পারেন। চাইলে পেছনের চুলগুলো হালকা পাফ করে নিতে পারেন। সামনের কার্লি চুলগুলো ইচ্ছেমতো সিঁথি করে দু’পাশে এলোমেলো করে ফেলে রাখুন। এবার পেছনের চুলে একটা হাতখোঁপা করুন। আরেকটু ভিন্নতা আনতে কানের একপাশ দিয়ে খোঁপার কিছু চুল বের করে দিন। সামনের চুল কার্ল করতে না চাইলে টুইস্ট করে পছন্দমতো স্টাইল করতে পারেন। খোঁপার একপাশে বড় ফুল গুঁজে দিন। আবার গাঁদা বা বেলি ফুলের মালা দিয়েও জড়িয়ে নিতে পারেন খোঁপা।

পোশাক বুঝে গয়না

হালকা সাজ পোশাকের সঙ্গে গয়নাও হালকা হওয়া চাই। সালোয়ার-কামিজের সঙ্গে মাটি, কাঠ বা মেটালের দুল পরুন। গলায় কিছু না পরাই ভালো। হাতে চুড়ি পরতে পারেন। এখানেও বেছে নিন কাঠ, মাটি, মেটাল বা কাচের রেশমি চুড়ি। শাড়ি পরলে কানের দুলের সঙ্গে গলায় লম্বা পুঁতির মালা পরুন। সঙ্গে হাতভর্তি চুড়ি। পোশাক যা-ই হোক, দিনের সাজে পরুন স্লিপার বা অল্প উচ্চতার হিল। সাজের পূর্ণতা আনতে ব্যবহার করুন হালকা সুগন্ধি।

ছেলেদের সাজ

বসন্তের দিনে ছেলেদের তেমন প্রস্তুতির দরকার পড়ে না। তবে বাসন্তী রংয়ের পাঞ্জাবি পরেই যে ফাল্গুন পার করতে হবে এমন কোনো কথা নেই। প্রকৃতির যেকোনো উজ্জ্বল রংয়ের সঙ্গে মিলিয়ে কমলা, লাল, সবুজ, হলুদ পাঞ্জাবি পরতে পারেন। সঙ্গে চোজ-পায়জামা। পাঞ্জাবি পরতে না চাইলে উজ্জ্বল রংয়ের শার্টও পরতে পারেন। সেক্ষেত্রে জিন্স-প্যান্ট বেশ মানিয়ে যাবে। সকালে শেইভ করার পর লোশন লাগানোর পাশাপাশি ময়েশ্চারাইজার ক্রিম ব্যবহার করুন। তাহলে শুষ্ক আবহাওয়ায় মুখ টানের ব্যাপারটা আর ঘটবে না।

টিপস

* মেইকআপ অনেকক্ষণ ঠিক রাখতে প্রথমে মুখে এক টুকরা বরফ ঘষে নিন।

* আইশ্যাডো লাগানোর আগে চোখের নিচে পাউডার লাগান। শ্যাডো লাগানোর সময় চোখের নিচে যা পড়বে, তা ঝেড়ে ফেলুন।

* বাইরে বের হওয়ার সময় ব্যাগে কমপ্যাক্ট পাউডার, টিস্যু পেপার, কাজল, চিরুনি এবং ছোট একটি আয়না রাখুন।

* চুল খোলা রাখলে ব্যাগে একটা পাঞ্চ ক্লিপ রাখুন।

* পোশাকের রংয়ের সঙ্গে মিলিয়ে ফুল নিতে হবে এমন কিন্ত নয়। পোশাকের বিপরীত রংয়ের ফুলও বেশ মানায়।

* মনমতো চুলের সাজ পেতে আগেই চুলের কিছু স্টাইল করে দেখুন আপনাকে কোনটিতে ভালো মানায়। তাহলে আর পহেলা ফাল্গুনের সকালে দোটানায় পড়তে হবে না।