চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে দীর্ঘদিন যাবত চলছে চোরাই তেলের ব্যবসা। কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না তাদের। কর্ণফুলী নদীতে নোঙর করা তেলের জাহাজ ও বিভিন্ন ডিপো থেকে চোরাই পথে এ তেল সংগ্রহ করে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে পাচার করে চক্রটি। জানা যায়, বেশির ভাগ চোরাই তেলের সিন্ডিকেট রয়েছে জুলধা ডাঙারচর এলাকায়।

সূত্র জানায়, জুলধা থেকে মিনি ট্রাক যোগে সীতাকুন্ডের ভাটিয়ারি এলাকায় এসব তেল পাচার করা হয়। গত ২৭ মে কর্ণফুলী থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ২৯ ড্রাম তেলসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠান। এরা হলেন-বেলাল হোসেন (২৮), মো. আকাশ (২৭) ও শাহাজান প্রকাশ রাহী (১৯)। শাহমীরপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ অমিতাভ দত্ত এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

স্থানীয় সূত্রে আরো তথ্য মিলে, এসব ব্যবসার সাথে জুলধা এলাকার আলমগীর নামক এক সিন্ডিকেট চক্রের সদস্য জড়িত। যার যোগসাজশে লাখ লাখ টাকার চোরাই তেলের কারবার হয়। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ট্যাঙ্ক ভাড়া করে তারা অপরিশোধিত তেল মজুদ করে রাখেন। আর রাতের আঁধারে সুযোগ বুঝে দেশের বিভিন্ন জায়গায় এসব পিলাই বা ফার্নিস তেল পাচার করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেন। এতে জড়িত রয়েছে কিছু কোম্পানীর কেয়ারটেকার ও হারুন নামে আরেক ব্যক্তিও।

চট্টগ্রামে কর্ণফুলীতে সক্রিয় রয়েছে একটি তেল চোর সিন্ডিকেট। এই চক্রটি বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পদ্মা মেঘনা যমুনা এশিয়াটিকসহ বিভিন্ন জ্বালানি তেল বিপণনকারী প্রতিষ্ঠানের কোটি কোটি টাকার তেল চুরি করে অবৈধ পন্থায় রাতারাতি বনে যাচ্ছেন কোটিপতি অন্যদিকে সরকারের গচ্ছা যাচ্ছে বিশাল অংকের টাকা।

ক্ষতির এই টাকা পুরণ করতে বাড়াতে হচ্ছে জ্বালনির দাম যার প্রভাব পড়ে নিত্যপণের উপর ফলে বাজার হয়ে উঠে উর্ধ্বমুখী বিপাকে পড়ে সাধারণ জনগণ। শুরু হয় নানা আলোচনা সমালোচনা নষ্ট হয় সরকারের ভাবমুর্তি।

এসআই অমিতাভ দত্ত বলেন, ডাঙ্গারচর এলাকায় অবৈধভাবে চোরাই তেল মজুদের খবর জানতে পারে পুলিশ। সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তিন জনকে আটক করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্য মতে ড্রামে রাখা ৫ হাজার ২২০ লিটার চোরাই তেল এবং একটি মিনি ট্রাক জব্দ করা হয়।

নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানায়, আসামিরা এস এ গ্রুপ ট্যাঙ্ক ডিপো থেকে চোরাই তেল বিক্রয়ের উদ্দেশ্য চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড ভাটিয়ারী নিয়ে যাচ্ছিল। উদ্ধার করা তরল জ্বালানি ফার্নিস তেলের আনুমানিক মূল্য ৮৭ হাজার টাকা। এ বিষয়ে জানতে এস এ গ্রুপ ট্যাঙ্ক কতৃপক্ষের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করেও কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

সদরঘাট নৌ পুলিশের ওসি এবিএম মিজানুর রহমান বলেন, নৌ পথে চোরাই তেলের ব্যবসা বন্ধে নদীতে প্রতিনিয়ত আমাদের টহল অভিযান চলছে। প্রায় সময় সাম্পান ও নৌযানসহ চোরাই তেল আটক করা হচ্ছে। তবুও এটা বন্ধ করা যাচ্ছে না। মূলত ট্যাঙ্ক ও ডিপোর কেয়ারটেকার এসবে জড়িত। পুলিশের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের আরো নজরধারি বাড়ানো উচিত বলে আমি মনেকরি।

(জেজে/এসপি/জুন ৩০, ২০২২)