শেখ ইমন, শৈলকুপা : ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আব্দুল মজিদ এর বিরুদ্ধে অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় মহিলা স্বেচ্ছাসেবী নিয়োগের অভিযোগ উঠেছে। 

জানা যায়, শৈলকুপা উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে ইউনিয়ন ভিত্তিক ১বছরের জন্য স্বেচ্ছাসেবী নিয়োগের জন্য ২৮ ও ২৯ জুন মৌখিক পরীক্ষার দিন ধার্য করা হয় এবং ২দিন ব্যাপী মৌখিক পরীক্ষা শেষে ১৫ জন মহিলা প্রার্থীকে চুড়ান্ত মনোনয়নের জন্য সুপারিশ করা হয়। উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এই নিয়োগ বোর্ডের সদস্য সচিব হওয়ায় তার ইচ্ছামত লোককে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে যেনতেনভাবে এই নিয়োগ পক্রিয়ার কাজ সমাপ্ত করেছে। এই নিয়োগ বোর্ডে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও তার উপস্থিতি ব্যতিরেখে এই অসাধু কর্মকর্তা নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ঝিনাইদহ উপ-পরিচালক কার্যালয় বরাবর চুড়ান্ত তালিকা প্রেরণ করেছে। এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোন নিয়মনীতি মানা হয়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের নির্দেশনা মোতাবেক ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে ৩০ জুনের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার কথা কিšতু তা অমান্য করে ৩ জুলাই বিকালে প্রার্থীদের চুড়ান্ত তালিকা ঝিনাইদহ উপ পরিচালক অফিসে পাঠানো হয়েছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। চুড়ান্ত তালিকা কাঁটা ছেঁড়া করে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচন করে নিয়োগ দেওয়ার আশায় এই অস্বচ্ছ কাজ করেছে বলে জানা যায়। এছাড়াও কর্মস্থলে থাকার কথা থাকলেও তা অমান্য করে সে প্রতিদিন দেরী করে ঝিনাইদহ থেকে শৈলকুপা অফিসে যাওয়া আসা করে যার ফলে অফিসের দৈনন্দিন কাজে স্থবিরতা নেমে এসেছে।

অভিযোগের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ৩ নং দিগনগর ইউনিয়নের আগুনিয়াপাড়া গ্রামের আঃ কুদ্দুসের মেয়ে লাইলুফার ইয়াসমিন নামে এক গর্ভবতী মহিলাকে চুড়ান্ত নিয়োগের জন্য নির্বাচন করা হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবী মাঠকর্মী শারিরীকভাবে সুস্থ্য হতে হবে মর্মে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ থাকলেও এক্ষেত্রে তা মানা হয়নি। তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে এই গর্ভবতী মহিলার নাম নির্বাচন করে সবার চোখে ধুলা দিয়ে নিয়োগ পক্রিয়া সমাপ্ত করেছে। একজন গর্ভবতী মহিলা ১ বছরের জন্য কি করে মাঠকর্মী হিসাবে কাজ করবে তা নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এদিকে গর্ভবতী মহিলা নিয়োগের জন্য নির্বাচন করায় এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে উপজেলা জুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে।

মৌখিক পরীক্ষা দিতে আসা ১২ নং নিত্যানন্দনপুর ইউনিয়ন এর উম্মে হাবিবা বলেন, এখানে কোন নিয়মনীতি মানা হয়নি। পরিবার পরিকল্পনা অফিসার অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় তার ইচ্ছামত মহিলা নিয়োগ এর সুপারিশ করেছে।

এ ব্যাপারে শৈলকুপা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আঃ মজিদ জানান, মহিলা বোরখা পরা অবস্থায় ছিল বিধায় আমি বুঝতে পারিনি, আমার ভুল হয়েছে। আমাদের উপ পরিচালক সাহেবের কাছে অভিযোগের ভিত্তিতে আমি আগামীকাল তাকে আসতে বলেছি। এরপর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

নিয়োগ বোর্ডের সদস্য ডাঃ রাশেদ আল মামুন বলেন, প্রার্থী গর্ভবতী মহিলা হওয়ায় আমি নিষেধ করেছিলাম কিস্তু উনি তা না শুনে তাকে নির্বাচন করেছে এবং বলেছে কাজ করতে পারলে বেতন পাবে না করতে পারলে বেতন পাবে না।
নিয়োগ বোর্ডের আরেক সদস্য ডাঃ গোলাম রহমান বলেন, আমার জানামতে একজন গর্ভবতী মহিলাকে চুড়ান্ত মনোনয়নের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার কানিজ ফাতেমা লিজা বলেন, জুন ফাইনালের কারণে খুবই ব্যস্ত ছিলাম তাই আমি মৌখিক পরীক্ষার নিয়োগ বোর্ডে উপস্থিত থাকতে পারেনি কাকে নিয়োগ দিয়েছে তাও বলতে পারবো না। মৌখিক পরীক্ষা শেষ করে তিনি আমার সাথে কোন কথাও বলেননি এমনকি আমার কোন স্বাক্ষর নিতেও আসেনি।

(এসআই/এসপি/জুলাই ০৫, ২০২২)