চাঁদপুর প্রতিনিধি : চাঁদপুরের ৪০টি গ্রামে পবিত্র ঈদুল আজাহা উদযাপিত হবে আজ শনিবার। প্রায় এক শতাব্দী ধরে ওই সব গ্রামের মুসলমানরা সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করে আসছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৪০টি গ্রামের মুসল্লিরা ইসলামের চার মজহাবের মধ্যে হানাফি মজহাবের অনুসারী। হাজীগঞ্জ উপজেলার বড়কুল পশ্চিম ইউনিয়নের সাদ্রা হামিদিয়া দাখিল মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ মরহুম মাওলানা আবু ইছহাক ইংরেজি ১৯২৮ সাল থেকে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ইসলামের সব ধর্মীয় রীতিনীতি প্রচলন শুরু করেন।

মাওলানা ইছহাকের মৃত্যুর পর থেকে তার ৬ ছেলে এ মতবাদের প্রচার চালিয়ে আসছেন। এদের মধ্যে তার বড় ছেলে আবু যোফার মোহাম্মদ আবদুল হাই সাদ্রাভী অন্যতম।

চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ, ফরিদগঞ্জ, মতলব দক্ষিণ ও কচুয়া উপজেলার ৪০টি গ্রামে প্রায় ৮৬ বছর ধরে এভাবে রোজা, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজাহা উদযাপিত হয়ে আসছে।

আগাম ঈদ পালন নিয়ে অতীতে একাধিকবার সংঘাত ও সংর্ঘষের ঘটনা ঘটেছে। দীর্ঘদীন ধরে বিষয়টি নিয়ে তর্ক-বিতর্ক চললেও আজ পর্যন্ত এটির স্থায়ী সমাধান হয়নি। ফলে একই গ্রামের এমনকি একই পরিবারের সদ্যসদের কেউ এক দিন আগে আবার কেউ এক দিন পরে ঈদ উদযাপন করেন।

যেসব গ্রামে আজ ঈদ উদযাপন হবে সেগুলো হলো- হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা, সমেশপুর, অলিপুর, বলাখাল, মনিহার, বেলচা, জাকনি, প্রতাপপুর, গোবিন্দপুর, দক্ষিণ বলাখাল; ফরিদগঞ্জ উপজেলার সেনাগাঁও, বাসারা উভারামপুর, উটতলী, মুন্সীরহাট, মূলপাড়া, বদরপুর, পাইকপাড়া, সুরঙ্গচাইল, বালিথুবা, কাইতাড়া, নুরপুর, শাচনমেঘ, ষোল্লা, হাঁসা, চরদুখিয়া; মতলব দক্ষিণ উপজেলার দশআনী, মোহনপুর, পাঁচআনী ও কচুয়া উপজেলার উজানি গ্রাম।

হাজীগঞ্জ পাইলট হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের অফিস সহকারী ও সাদ্রা গ্রামের বাসিন্দা আবদুল মালেক মিয়াজী বলেন, ‘আমার বাড়িতে শনিবার ঈদ পালন হবে। কিন্তু আমি সারাদেশের মুসলমানদের সঙ্গে সোমবার ঈদ পালন করব।’

সাদ্রা গ্রামের গদিনশীন পীর মাওলানা আবু যোফার আবদুল হাই বলেন, সৌদি আরবের সাথে বাংলাদেশের সময়ের ব্যবধান মাত্র ৬ ঘণ্টা। ৬ ঘণ্টা ব্যবধানের জন্য রোজা ও ঈদ পালনে বাংলাদেশে এক বা দুই দিন ব্যবধান হতে পারে না।

তিনি আরো বলেন, আজ শনিবার সাদ্রা হামিদিয়া দাখিল মাদ্রাসা মাঠে ঈদুল আজহার জামাত আদায় করা হবে। তার পরই কোরবানির গরু জবাই করা হবে।

ইউপি চেয়ারম্যান মহীনউদ্দিন মুন্সী জানান, তারা কয়েক যুগ ধরে আগাম ঈদ পালন করে আসছেন। অতীতে স্থানীয় জনগণ বাধা দিলেও এখন আর এ সব বিষয়ে নাক গলায় না।

(ওএস/এইচআর/অক্টোবর ০৪, ২০১৪)