কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি : আসন্ন ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার পশুর হাটগুলোয় ক্রেতা-বিক্রেতারা দালালদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন। দালালরা ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের কাছ থেকে খেয়াল-খুশি মতো হাতিয়ে নিচ্ছেন টাকা। বর্তমানে দালাল ছাড়া পশু কেনা-বেচা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

সরেজমিন উপজেলার মির্জাপুর, মঠখোলা, পুলেরঘাট ও হোসেন্দী পশুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, দালালদের মধ্যে অনেকেরই গলায় গামছা ঝোলানো। পশু হাটে নিয়ে আসার আগেই মালিকের সঙ্গে তাদের দাম-দর ঠিক করা হয়। ঠিক করা দামের বেশি যে টাকা বিক্রি হবে সে টাকা ওই দালাল নিয়ে নেন। হাটে পশু নিয়ে আসার পরও দাম-দর ঠিক করা হয়। আবার তাৎক্ষণিক ক্রেতার উপস্থিতিতেও সাংকেতিক ভাষার মাধ্যমে তারা কমিশন ঠিক করে নেন।
ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, বর্তমানে দালাল ছাড়া বাজার থেকে কোন গরু বা ছাগল কেনা সম্ভব নয়। দালালদের সহযোগিতা নিতেই হবে। তারাই বিক্রি করে দেবেন ও কিনে দেবেন। তাদের সহযোগিতা না নিলে তুলনামূলক কম দামে বেচতে ও বেশি দামে কিনতে হয়।
কয়েকজন দালালদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, পশু কেনা-বেচায় সহযোগিতা করে তারা প্রতিদিন ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা রোজি করে থাকেন। কোরবানির ঈদের সময় পশুর হাটগুলোতে তাদের ব্যবসা সবচেয়ে ভাল হয়। এই ব্যবসায় দালালরা বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করে থাকেন। প্রচলিত ভাষা না বলে নিজেদের সৃষ্টি করা ভাষা বা ইশারা-ইঙ্গিত দিয়ে কথা বলেন। পশুর হাতে তারা এসব ভাষা ব্যবহার করে থাকেন। তাদের এই ভাষা বা ইশারা গরু ব্যবসায়ীরা ছাড়া অন্য কেউ বুঝতে পারেন না।

উপজেলার হোসেন্দী পশু হাটে গরু কিনতে আসা লতিফ মিয়া (৪০) জানান, দালাল ছাড়া গরু কিনা সম্ভব নয়। গরু কিনতে হলে দালাল লাগবেই। আমরা তো কোন গরুর কত দাম তা কিছুই বুঝি না। তাই এক দালালের মাধ্যমে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে একটি গরু কিনেছি।

একই বাজারের একজন দালালের সঙ্গে আলাপ হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, গরু-ছাগল কেনা-বেচা করতে মানুষকে সহযোগিতা করে থাকি। একটি গরু বিক্রি করে দিলে খুশি হয়েই ২০০ থেকে ৩০০ টাকা দেয়। এতে করে প্রতি বাজারে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা রোজি হয়।

(পিকেএস/জেএ/অক্টোবর ০৪, ২০১৪)