ডেস্ক রিপোর্ট, ঢাকা : মানুষের মস্তিষ্ক বড়ই আজব এক কারখানা! এর ওয়্যারহাউসের ভিতরে ক্রমাগত যে কী কী চলতে থাকে, তার হদিশ পাওয়া দায়। এমনতি বড়ই শান্তিপ্রিয়, তবে মাঝেমধ্যেই এর অন্দরমহলের মধ্যে দেখা দেয় অসামঞ্জস্য। আর স্বাভাবিক চিন্তাভাবনার বাইরে যখন মস্তিষ্ক নানা রকম কাণ্ডকারখানা চালাতে থাকে তখনই তা চিহ্নিত হয়ে যায় মানসিক সমস্যা হিসেবে! তেমনই ৭টি মানসিক সমস্যার কথা রইল...

অটোফ্যাজিয়া

যাঁদের এই মানসিক সমস্যাটি রয়েছে তাঁরা ক্রমাগত নিজের শরীরকে ব্যাথা দিতে থাকেন। অনেকটা কমপালশনের পর্যায়ে পৌঁছে যায়! এটা শুনে তেমন অস্বাভাবিক মনে না হলেও পরের যে কথাটি বলব তা নিঃসন্দেহে অস্বাভাবিক। অটোফ্যাজিয়া আক্রান্ত মানুষ নিজের শরীর কামড়ায় এমনকি কখনও কখনও শরীরের কিছু অংশ খেয়েও ফেলে। প্রচণ্ড বিষণ্ণতা, সিজোফ্রেনিয়া ইত্যাদি মানসিক সমস্যার পাশাপাশি অটোফ্যাজিয়া দেখা দিতে পারে।

অ্যামপিউটি আইডেন্টিটি ডিজঅর্ডার

মানসিক সমস্যা হওয়ার পাশাপাশি এটি এক ধরনের স্নায়বিক সমস্যাও। রোগী মনে করেন তিনি নিজের শরীরের কোনও বিশেষ একটি অঙ্গ ছাড়াই ভালোভাবে বাঁচতে পারবেন। এই বিশ্বাস থেকে তাঁরা নিজেরাই নিজেদের অঙ্গচ্ছেদ করার চেষ্টা করে থাকেন।

অনিওম্যানিয়া

যাঁরা খুব বেশি কেনাকাটা করে থাকেন তাঁদের আমরা প্রায়ই শপাহলিক বলে চিহ্নিত করে থাকি। কখনও কখনও তো কেনাকাটা করতে শুরু করলে আর থামতেই পারেন না। একেবারে ফতুর হয়ে না যাওয়া পর্যন্ত তারা ক্রমাগত কেনাকাটা করতেই থাকেন। এটাও কিন্তু একটা মানসিক রোগ যার নাম অনিওম্যানিয়া।

কটার্ড'স সিনড্রোম

এই অসুখটিও একাধারে স্নায়বিক এবং মানসিক। এ ক্ষেত্রে রোগী নিজেকে মৃত মনে করে এবং অনেক সময় অমর বলেও মনে করতে থাকেন।

ক্লিনিক্যাল লাইক্যানথ্রপি

এই সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তি মনে করেন, তিনি হঠাৎ করেই কোনও একটি জন্তুতে রূপান্তরিত হয়ে গিয়েছেন। কখনও কখনও তো তাঁরা সেই বিশেষ জন্তুর মতো আচরণও করা শুরু করে দেন।

প্যারিস সিনড্রোম

এই সমস্যাটা দেখা দেয় শুধুমাত্র প্যারিসে বেড়াতে যাওয়া জাপানি ট্যুরিস্টদের মধ্যে। জাপানিরা সাধারণত একটু বেশিই নমনীয় স্বভাবের হয়ে থাকেন। ফলে স্পষ্টভাষী স্বভাবের ফরাসীদের আচরণে তাঁরা যে "কালচার শক" পান, তারই একটি তীব্র রূপ হলো প্যারিস সিনড্রোম।

ডায়োজেনেস

প্রাচীন গ্রিক দার্শনিক ডায়োজেনেসের নামে নামকরণ হয়েছে এই সমস্যাটির। তিনি বাস করতেন একটি ব্যারেল বা পিপার ভেতরে এবং বিশ্বাস করতেন পৃথিবীর সবকিছুই অর্থহীন, এবং তিনি নিজেও তুচ্ছ এক প্রাণী। এই রোগে আক্রান্ত মানুষ নিজেকে প্রচণ্ড রকমের অবহেলা করে থাকেন এবং অন্যদের সঙ্গ এড়িয়ে চলতেই পছন্দ করেন। সাধারণত বার্ধক্যে উপনীত হওয়া মানুষদের মধ্যে মাঝে মাঝে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।

(ওএস/এইচ/ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৪)