শেখ ইমন, শৈলকুপা : তার ছুটে চলা সর্বত্র। কখনও তিনি লাঠি হাতে সড়কে, কখনও মানুষের দুঃখ-কষ্ট,সমস্যা নিরসনে থানার গোলঘরে। আবার কখনও সমস্যা সমাধানে গ্রামের মেঠোপথে ছোটাছুটি। এসবের একটাই লক্ষ্য মানুষের আস্থা অর্জন।

বলছি মানবিক এক পুলিশ অফিসারের কথা। নাম তার আমিনুল ইসলাম। ঝিনাইদহের শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তিনি। শৈলকুপা থানায় যোগদান করেছেন চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারী। দুরন্ত এই ওসির দায়িত্ব পালনের ভৌগোলিক সীমা সামান্য হলেও তার কাছে সহায়তা চাওয়ার ক্ষেত্রে যেন নেই কোনো সীমারেখা।

আইনগত সহায়তা, চিকিৎসা সহায়তা কিংবা পরামর্শ চেয়ে তার কাছে কল আসে উপজেলা জুড়ে ছড়িয়ে থাকা মানুষের। মানবিক ও ব্যতিক্রমী সব উদ্যোগ নিয়ে মানুষের হৃদয়ে ঠাঁই পাওয়া এই পুলিশ কর্মকর্তার কারণে শৈলকুপা থানায় সারাক্ষণ ভিড় থাকে সহায়তা প্রত্যাশীদের।

ওসি আমিনুল ইসলাম দৈনিক বাংলা ৭১কে বলেন, ‘আমি মানুষের আস্থার ঠিকানা হতে চাই। তারা স্বপ্নে যে পুলিশ প্রত্যাশা করে, আমি সেই পুলিশ হয়ে বাঁচতে চাই। শুধু পদাধিকার বলে নয়, হতে চাই জনগণের প্রত্যাশার ওসি। মানুষের মনে দীর্ঘদিন ধরে যত নেতিবাচক ধারণা সব মুছে দিতে চাই।’

মানুষের মাঝে থাকা পুলিশভীতি দূর করতে ওসি নিজেই গিয়েছেন এলাকায় এলাকায়। সেখান থেকে মাদক, ইভটিজিং সহ অন্যান্য অপরাধ ও অপরাধী সম্পর্কে ধারণা নেন তিনি। সমাধানযোগ্য বিষয়গুলো তাৎক্ষণিক সমাধান করেন। বাকি সমস্যাগুলো নোটবুকে টুকে নেন, পরে তাও সমাধান করে দেন। এই উদ্যোগ পুলিশ- জনতা আস্থার সম্পর্ক তৈরির পাশাপাশি অপরাধ ও অপরাধীদের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধেও ব্যাপক ভূমিকা রাখে। ওসি আমিনুলের এই উদ্যোগের ফলে অপরাধ জগত থেকে স্বাভাবিক জীবনে এসেছেন অনেকেই।

বর্তমানে ওসি আমিনুল ব্যস্ত মাদকশূন্য ও সামাজিক ও রাজনৈতিক দাঙ্গা-হাঙ্গামা মুক্ত এলাকা গড়তে। দেশের প্রথম মাদকশূন্য থানা গড়তে চান তিনি। এ লক্ষ্যে এলাকাভিত্তিক অভিযানও শুরু করেছেন। নির্দিষ্ট একটি এলাকাকে মাদকশূন্য ঘোষণার মাধ্যমে এই কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন বলে জানিয়েছেন এই ওসি।

চলতি মাসের ৩১ জুলাই শৈলকুপা উপজেলা পরিষদের উপ-নির্বাচন। বিগত দিনে শৈলকুপায় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হামলা,মামলা,খুন সহ নানাবীধ অপরাধ কর্মকান্ড চলে এসছে। তবে এবারের চিত্র ভিন্ন। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোনো দাঙ্গা- হাঙ্গামার সৃষ্টি হওয়ার আগেই ওসির নজরদারিতে সব পন্ড হয়েছে।

ওসি আমিনুল ইসলাম বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোন সহিংসতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে দেয়া হবে না। অবাধ সুষ্ঠু ভোটের মাধ্যমে জনগন যেন তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে বিজয়ী করতে পারে তার জন্য সব ধরণের আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(এসআই/এসপি/জুলাই ২৭, ২০২২)