শিমুল সাহা, লক্ষ্মীপুর : আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করলেও সাংবাদিকদের বেশিরভাগ প্রশ্নেরই কোনও উত্তর দেয়নি লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ। মৌখিকভাবে তাদের বক্তব্য জানানোর পর সাংবাদিকদের হাতে স্বাক্ষরবিহীন প্রেস বিজ্ঞপ্তি ধরিয়ে দেন তারা। এসময় জেলা পরিষদের কয়েক কোটি টাকা মূল্যের সম্পত্তির ইজারাদারদের নাম প্রকাশে অনীহা জানান প্রতিষ্ঠানটির প্রশাসক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা।

সংবাদ সম্মেলনে জেলা পরিষদের প্রশাসক মোহাম্মদ শাহজাহানের বক্তব্যের পর সাংবাদিকরা একের পর এক প্রশ্ন করতে থাকলে কিছু প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে তড়িগড়ি করে উঠে চলে যান। একই সঙ্গে উঠে যান জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কূল প্রদীপ চাকমা। রবিবার (৩১ জুলাই) দুপুরে জেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে অবৈধ দখল ও প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কে বিভ্রান্তি ছড়ানো দাবি করে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এর আগে গতকাল শনিবার একই সম্পত্তি নিয়ে লক্ষ্মীপুর প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ভুক্তভোগীরা।

সংবাদ সম্মেলনে জেলা পরিষদের প্রশাসক মোহাম্মদ শাহজাহান জানান, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলাধীন পৌর শহরের বাঞ্চানগর মৌজার ৭৬ শতাংশ জমির মালিক লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদ। প্রতিপক্ষ ১৯৪২ সনে ডিষ্ট্রিক্ট বোর্ডের ভূমি নবদ্বীপকে ছাফ কবলা দেয়ার বিষয়টি সঠিক নয়। কেননা আইন অনুযায়ী ডিষ্ট্রিক্ট বোর্ড সরকারের পূর্ব অনুমোদন ব্যতিত কোন স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর করতে পারেনা বলে দাবি করেন।

তিনি বলেন, বহু পূর্ব হতেই জেলা পরিষদ ইজারা প্রদানের মাধ্যমে ওই সম্পত্তি ভোগ দখল করে আসছে। শুক্রবার ওই ভূমিতে জেলা পরিষদের টিনসেড ঘর ও ইজারাদারদের দোকানঘরের চাল-বেড়ার টিন মেরামতের কাজ শুর করে। এসময় ৩০/৪০ জনের একটি বাহিনী দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে দোকানঘর ভাংচুর করে। একই সঙ্গে উপস্থিত স্টাফদের মারধর করে। তবে, ইজাদারদের নাম গোপনীয় বিষয় বলে এড়িয়ে যান জেলা পরিষদ কর্র্তৃপক্ষ।এসময় সাংবাদিকদের বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে তড়িগড়ি করে সংবাদ সম্মেলনস্থল ত্যাগ করেন আয়োজকরা।

এদিকে গতকাল শনিবার ভুক্তভোগীদের ব্যানারে লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাবে ৮০ বছর ভোগদখলীয় জমি ব্যক্তি মালিকানা থেকে লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদ ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী দিয়ে জোরপূর্বক উচ্ছেদের প্রতিবাদে সাংবাদিক সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী পরিবার। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নাছির আহাম্মদ, আরতি রানি পাল, স্বপন চন্দ্র নাথ, ইমরান মাহমুদ সবুজ জানান, ১৯৪২ সনে তৎকালীন ডিস্ট্রিক্ট বোর্ড থেকে ছাপ কবলা মূলে ৭৬ শতাংশ জমি ক্রয় করেন তারা। পরে ভোগ দখল করে নিয়মিত খাজনা পরিশোধ করেন। তাদের মালিকানা রেকর্ডও রয়েছে। শুক্রবার সকালে কোন রকম নোটিশ ঘোষণা ছাড়াই ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও সেচ্ছাসেবকলীগ সহ ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী দিয়ে ভুক্তভোগীদের দোকান ঘর হামলা ও ভাংচুর করে বাঁশ কাঠ দিয়ে দখলের চেষ্টা করে জেলা পরিষদ।

পরে স্থানীয়রা ৯৯৯ ফোন করলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। দখলে বাধা দিলে যুবলীগ নেতা নজরুল ইসলাম ভুলু, মাহাবুবুর রহমান মাহমুব, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা চৌধুরী মাহামুন্নবী সোহেল, জেলা সেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি বেলায়েত হোসেন বেলাল, সাধারণ সম্পাদক মাহবুব ইমতিয়াজ এর উপস্থিতিতে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা তাদের উপর হামলা চালায়। এতে তাদের বেশ কয়েকজন নারী পুরুষ আহত হয়।

(এস/এসপি/জুলাই ৩১, ২০২২)