স্টাফ রিপোর্টার, ঢাকা : কোরবানি পশুর চামড়ায় কম দামের বিদেশি লবণ ব্যবহারে প্রায় ২৫০ কোটি টাকার পশুর চামড়া নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন চামড়া রফতানিকারকরা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশি পশুর চামড়ায় যে ধরনের লবন প্রয়োজন তার সব গুণ আছে দেশীয় লবণে। অন্যদিকে ভারতসহ অন্যান্য দেশের লবণ স্থানীয় পরিবেশের ওপর নির্ভর করে তৈরি করা হয়। ফলে অন্য দেশের পরিবেশের উপযোগী লবণ দেশীয় পরিবেশে ব্যবহার করার ফলে সংগৃহীত পশুর চামড়া আন্তর্জাতিক মান হারাবে।

বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আলী হোসেন বলেন, কোরবানি ঈদে আনুমানিক প্রায় ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকার চামড়া স্থানীয় ভাবে সংগ্রহ করা হবে। কিন্তু এর মধ্যে ঠিক সময়ে চামড়ায় দেশীয় লবণ ব্যবহার না করায় নিন্মমানের বিদেশি লবণের কারণে ১০ শতাংশ চামড়া নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এই আশঙ্কা সব স্তরের চামড়া ব্যবসায়ীরা করছেন।

কিন্তু ফড়িয়া বা ছোট চামড়া ব্যবসায়ীরা কেন বিদেশি লবনের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে এমন প্রশ্নে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক হাজী মোহাম্মদ টিপু সুলতান বলেন, বিদেশি ও দেশীয় লবণের দামের পার্থক্যের কারণে এটা হচ্ছে। বস্তা প্রতি বিদেশি ও দেশীয় লবনের মধ্যে ফারাক মাত্র ৪০ থেকে ৫০ টাকা। আর এই সামান্য কম দাম হওয়ায়ই তৃণমূল পর্যায়ের চামড়া ব্যবসায়ীরা চামড়া সংরক্ষণে বিদেশি লবণ ব্যবহার করে থাকে।

তাছাড়া প্রতিবছরই দক্ষ জনবলের অভাবে অসংখ্য চামড়া আন্তর্জাতিক মান হারায়। তার ওপর বিদেশি লবণের অধিক ব্যবহারে এবারের কোরবানির চামড়ার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলেই মনে করছে চামড়াজাত পণ্য রফতানিকারকরা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, পুরো বছরে প্রয়োজনীয় চামড়ার ৭০ শতাংশই সংগৃহীত হয় কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে।

তবে লবণ মালিক সমিতি থেকে জানানো হয়, কোরবানিকে কেন্দ্র করে যে পরিমাণ লবণ প্রয়োজন তা দেশীয় উৎপাদন থেকেই সংগ্রহ করা সম্ভব। এবারের কোরবানি ঈদে চামড়া সংরক্ষণে যে ২৫ হাজার টন লবণ প্রয়োজন তা দেশীয় উৎপাদিত লবণ থেকেই পাওয়া যাবে। তবে দামের বিষয়ে নতুন কোনো সিদ্ধান্ত এখনো নেয়া হয়নি। দেশীয় এক বস্তা লবণের দাম বর্তমানে ৫৩০ টাকা থেকে ৫৫০ টাকা। অন্যদিকে ভারতীয় ও বিদেশি এক বস্তা লবণের দাম পড়ছে প্রায় ৪৩০ টকা থেকে ৪৫০ টাকা।

(ওএস/অ/অক্টোবর ০৭, ২০১৪)