স্টাফ রিপোর্টার : জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বড় ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামালের শিষ্টাচার যুব রাজনীতির জন্য অনুকরণীয় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ।

তিনি বলেছেন, শেখ কামাল ২৬ বছর বয়সে বহুমাত্রিক প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে গেছেন। তিনি দেশের স্বাধীনতা অর্জনে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন। রণাঙ্গনের সাহসী যোদ্ধা ছিলেন। এর পাশাপাশি তার শিষ্টাচারও ছিল অনুকরণীয়। শেখ কামালের আচরণ, শিষ্টাচার অনুসরণ করে আগামীদিনের নেতৃত্বের জন্য যুব সমাজকে তৈরি করতে হবে। তার শিষ্টাচার ধারণ করতে পারলে সৃষ্টিশীল মননের সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব হবে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামালের ৭৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার (৫ আগস্ট) বিকেল ৩টায় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত আলোচনাসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি। আলোচনাসভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ।

মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, শেখ কামাল ছিলেন বাংলার শ্রেষ্ঠ সন্তানদের একজন। তিনি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রশিক্ষণ নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। রাষ্ট্রপতির (বঙ্গবন্ধু) ছেলে হলেও কখনো ক্ষমতা তাকে স্পর্শ করতে পারেনি। তারুণ্যের অহংকার শেখ কামাল ছিলেন সংস্কৃতিপ্রেমী।

বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল বাংলাদেশের আধুনিক ফুটবলের প্রবর্তক এমন মন্তব্য করে হানিফ বলেন, বাংলাদেশের মানুষ ফুটবল প্রেমী। শেখ কামাল একজন দক্ষক্রীড়া সংগঠক ছিলেন। তিনি আবাহনী ক্রীড়াচক্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আবাহনী প্রতিষ্ঠার পর ক্রীড়াঙ্গনে অভাবনীয় উন্নতি হয়েছিল। দেশে ফুটবলের জাগরণ সৃষ্টি হয়েছিল।

দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে অবক্ষয় দেখলে শেখ কামালের কথা মনে পড়ে এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, একসময় গ্রামে-গঞ্জে জারি-সারি, পালাগান, নাটক হতো। আজ তা হারিয়ে গেছে। সংস্কৃতি মানুষের জীবনকে বিকশিত করার জন্য ভূমিকা রাখে। শেখ কামাল মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য হাজার বছরের সংস্কৃতি তুলে ধরতে থিয়েটার গোষ্ঠী প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। স্পন্দন নামে একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন শেখ কামাল।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, শেখ কামাল রাষ্ট্রপ্রধানের সন্তান ছিলেন কিন্তু পদ-পদবিতে তার আগ্রহ ছিল না। তিনি বঙ্গবন্ধুর পাশে থেকে দেশ গড়ায় ভূমিকা রাখতে চেয়েছিলেন।

শহীদ শেখ কামাল জীবনের শেষদিন পর্যন্ত মানুষের জন্য কাজ করেছেন উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের এ সিনিয়র নেতা বলেন, ক্ষমতার শীর্ষ পর্যায়ে থাকলে মানুষের জীবনাচরণে পরিবর্তন আসে। কিন্তু শেখ কামাল ছিলেন একেবারে সাদামাটা মানুষ। কখনো তার মধ্যে দাম্ভিকতা কাজ করেনি। আর আরেক রাষ্ট্রপতির ছেলে তারেক রহমান দেশে হাওয়া ভবন বানিয়ে লুটপাট, মানুষ হত্যা করেছে। বাংলাদেশে সন্ত্রাস, জঙ্গির চারণভূমি বানিয়েছিল। কি বৈচিত্র্য।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফম. বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি ও দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া। সভা পরিচালনা করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির।

(ওএস/এএস/আগস্ট ০৫, ২০২২)