ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁওয়ে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার ঘটনায় কাটছে না আতঙ্ক। বন্ধ করে রাখা হয়েছে নির্বাচনী এলাকায় গড়ে উঠা ছোট বড় সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ঘটনার দু সপ্তাহ হতে চললেও এখানো স্বাভাবিক হচ্ছে না জেলার রানিশংকৈল উপজেলার মহেশপুর এলাকার সুন্দরপুর গ্রামের থমথমে পরিবেশ।

স্থানায়ী ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন, গত ২৭ জুলাই বুধবার নির্বাচনী সহিংসতার ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ৮০০ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হওয়ায় দোকান বন্ধ রেখে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন সব ব্যবসায়ীরা সহ স্থানীয় পুরুষ বাসিন্দারা । এতে চরম বিপাকে পড়েছেন সেসব পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, জেলার রাণীশংকৈল বাচোর ইউনিয়নের মহেশপুর এলাকার বেল মার্কেটের প্রায় সব দোকানপাঠ বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। দু-তিনটি পান দোকান খোলা থাকলেও কোন গাড়ির শব্দ কানে আসতেই দোকান খোলা রেখেই পালিয়ে যাচ্ছে দোকানীরা।

এসময় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পান দোকানীসহ কয়েকজন ব্যবসায়ী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বেশ কয়েক দিন ধরে স্থীরভাবে দোকান খুলতে পারিনা। পান বিক্রি করেই সংসার চলে। মামলা হওয়ার পর থেকে বাজারে মানুষ আসেনা। যেখানে প্রতিদিন দুই হাজার টাকা বিক্রি হতো এখন ২০০ টাকাও হয় না। এ কেন্দ্রটির প্রায় ১৮শ ভোটার। সবাইতো অন্যায় করেনি। আমি ভোট দিয়ে চলে আসছি পরে কি হয়ছে সেটাও জানি না। ভোট দেওয়ায় কি আমাদের অপরাধ হয়ে গেলো। রাতে বাড়িতে থাকতে পারিনা এই বুঝি পুলিশ আসলো। কত যে কষ্টে আছি তা বলে বুঝাতে পারবো না।

উল্লেখ্য, গত ২৭ জুলাই নির্বাচনের দিন সাত মাস বয়সী সুরাইয়াকে নিয়ে মা মিনারা বেগম রাণীশংকৈল উপজেলার বাচোর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ভাংবাড়ি ভিএফ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে বাহিরে অবস্থান করছিলেন। ফলাফলকে কেন্দ্র করে পরাজিত ইউপি সদস্য সমর্থকদের সাথে আইনসৃংখলাবাহিনীর সংর্ঘষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের পুলিশ গুলি ছুড়লে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয় শিশু সুরাইয়া।

তবে আতঙ্কিত না হয়ে প্রত্যেককেই নিজ বাড়িতেই অবস্থান করার আহ্বান জানিয়েছে পুলিশ। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষিদের আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর হোসেন।

(এফআর/এসপি/আগস্ট ০৭, ২০২২)