চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : চট্টগ্রামের রাউজানে অসংখ্য ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক কাজে বাধ্য করে ভিডিও ধারণ করায় এবার ধরা পড়েছে আরেক পরিমল। রাসেল কবির (৪০) নামের এক শিক্ষককে গলায় জুতার মালা পরিয়ে মাথা ন্যাড়া করে এলাকা প্রদক্ষিণ করে স্থানীয়রা।

শনিবার বিকেলে তার ল্যাপটপ জব্দ করার পর এ ঘটনার প্রমাণ মেলে। শিক্ষক নামের কলঙ্ক রাসেল কবিরকে পরে থানায় সোপর্দ করা হয়।

অভিযুক্ত শিক্ষক রাসেল কবির বরিশাল জেলার ঝালিকাঠি এলাকার বৈশাখীয়া গ্রামের হদুয়ার আবদুর রবের ছেলে। তার বাবা আবদুর রব তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী। এ সুবাধে রাসেল ২০০৯ সালে তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার রাউজান তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে অবস্থিত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক রাসেল তিন বছর ধরে বিদ্যালয়ে বাণিজ্য শাখার শিক্ষক হিসেবে কর্মরত থাকার সুবাদে বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাশেই একটি কোয়ার্টারে থাকতেন।

ছাত্রীদের প্রাইভেট পড়ানোর নামে বিভিন্ন সময় শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনে বাধ্য করে তা ল্যাপটপের মাধ্যমে ভিডিও ধারণ করে রাখতেন তিনি। ধারণকৃত এসব ভিডিও চিত্র এলাকার বিভিন্নজনের মোবাইল ফোনে ছড়িয়ে দেয়া হয়।

ছাত্রীর কাছ থেকে অভিযোগের ভিত্তিতে স্থানীয়রা শনিবার তার ল্যাপটপটি জব্দ করার পর প্রমাণ পেলে তাকে আটক করা হয়। এসময় তিনি তিন ছাত্রীর সঙ্গে অবৈধ শারীরিক সম্পর্কের কথা স্বীকার করেন।

তার ধারণকৃত ভিডিও ফুটেজে আরো অসংখ্য ছাত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করার প্রমাণ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় স্থানীয়রা তাকে আটক করে প্রথমে গণধোলাই দেয়। পরে তাকে বিদ্যালয় এলাকায় জুতার মালা পরিয়ে ও মাথা ন্যাড়া করে রাউজান থানায় সোপর্দ করা হয়।

রাউজান থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ সাংবাদিকদের বলেন, স্থানীয় জনতা শিক্ষক রাসেলকে থানায় সোপর্দ করেছে। তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

এ ঘটনায় রাউজান তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী স্বপন কান্তি চক্রবর্তী শিক্ষক রাসেলকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেন। বিদ্যুৎকেন্দ্রের উপ-সহকারী পরিচালক (নিরাপত্তা) রুহুল আমিন বাদী হয়ে রাউজান থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।

এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মফিজুর রহমান বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষক রাসেল তিন বছর ধরে এখানে কমর্রত। এখানে আমি নতুন। এর আগে কি করেছে আমার জানা নেই।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, এ বিষয়টি শুনেছি। তদন্তে প্রমাণ পেলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, রাজধানীর ভিকারুন নিসা স্কুলের শিক্ষক পরিমল প্রাইভেট পড়ানোর নাম করে কয়েক ছাত্রীর সঙ্গে অবৈধ শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। বিষয়টি জানাজানি হলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হয়।


(ওএস/এটি/এপ্রিল ২৭, ২০১৪)