আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বায়ুদূষণের কারণে ২০১৯ সালে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় ২২ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সম্প্রতি এক বৈশ্বিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক দুই সংস্থা-হেলথ ইফেক্টস ইনস্টিটিউট এবং ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিকস-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্বে বায়ুদূষণের মধ্যে শীর্ষ শহরগুলোর মধ্যে ঢাকার অবস্থান পঞ্চম।

‘এয়ার কোয়ালিটি অ্যান্ড হেলথ ইন সিটিস’ শীর্ষক প্রতিবেদন বলা হয়েছে, ঢাকার প্রতি ঘনমিটার বাতাসে বার্ষিক গড় সূক্ষ্ম বস্তুকণার (পিএম২.৫) উপস্থিতি ৭১ দশমিক ৪ মাইক্রোগ্রাম এবং নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইডের (এনও২) উপস্থিতি ২৩ দশমিক ৬ মাইক্রোগ্রাম।

বাতাসে ভেসে থাকা সব কঠিন ও তরল কণার সমষ্টিই সূক্ষ্ম বস্তুকণা। এর মধ্যে অনেকগুলোই স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক। এই জটিল মিশ্রণে ধুলা, পোলেন, কালি, ধোঁয়া এবং তরল ড্রপলেটের মতো অসংখ্য জৈব ও অজৈব কণা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

পুরোনো যানবাহন, বিদ্যুৎকেন্দ্র, শিল্পপ্রতিষ্ঠান এবং আবাসিক এলাকায় রান্না ও গরমের জন্য পোড়ানো জ্বালানি থেকে নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইডের মতো ক্ষতিকর পদার্থ বাতাসে ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে দূষিত হচ্ছে বায়ু। শহরের বাসিন্দারা ব্যস্ত সড়কের কাছাকাছি বসবাস করেন। সে কারণে তারা গ্রামের লোকজনের তুলনায় বেশি পরিমাণে দূষণের শিকার হন।

এদিকে গত মে মাসে ওয়ার্ল্ড এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স প্রজেক্টের (একিউআইসিএন) হিসাবে ঢাকায় বায়ুদূষণের মাত্রা দেখা গেছে ৯৫ পিএম২.৫, যা সে সময় সহনীয় বলেই বিবেচনা করা হয়েছে। কিন্তু পরে দূষণের মাত্রা আবারও বাড়তে দেখা গেছে।

এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স বা একিউআই সূচক অনুসারে, বায়ুদূষণের মাত্রা ০ থেকে ৫০ পিএম২.৫ হলে সেটি ভালো, ৫১ থেকে ১০০ হলে তা সহনীয়, ১০১ থেকে ১৫০ বিশেষ শ্রেণির জন্য অস্বাস্থ্যকর, ১৫১ থেকে ২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর, ২০১ থেকে ৩০০ খুবই অস্বাস্থ্যকর এবং ৩০০-এর বেশি হলে তা মানবস্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক বলে বিবেচিত হয়।

কয়েক বছর ধরে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরগুলোর তালিকায় ওপরের দিকে নাম থাকছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার। সাম্প্রতিক এক হিসাবে দেখা গেছে, বছরের পাঁচ মাসই এ শহরের বায়ু ‘অস্বাস্থ্যকর’ থাকে।

(ওএস/এসপি/আগস্ট ১৭, ২০২২)