মোঃ সিরাজ আল মাসুদ, টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলে চলতি মৌসুমে পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। দাম ভাল পাওয়ায় লাভবান হচ্ছেন এই জেলার পাট চাষীরা। তবে দুই এক জায়গায় পানির অভাবে পাট জাগ দিতে না পারায় তা নষ্ট হতে বসেছে। তবে সব মিলিয়ে সোনালি আঁশ ও রুপালি কাঠি বিক্রি করে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছর পাটের ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকরা এ বছর পাট চাষের দিকে বেশি ঝুঁকেছেন। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও মাটি চাষের উপযুক্ত হওয়ায় পাট চাষে সফল হয়েছেন চাষীরা। গত বছর জেলার ১২টি উপজেলায় ১৬ হাজার ৮৮ হেক্টর জমিতে ১ লাখ ৬৯ হাজার ৯৮৯ বেল্ট পাট উৎপাদন হয়েছিলো। চলতি মৌসুমে ১৫ হাজার ৬৪২ হেক্টর জমিতে চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও চাষ হয়েছে ১৭ হাজার ১৪৭ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৭৩ হাজার ৭৫০ বেল্ট।

এর মধ্যে সদর উপজেলার ২ হাজার ৭৪০ হেক্টর, বাসাইলে ৪২৯ হেক্টর, কালিহাতীতে ১ হাজার ১৯৫ হেক্টর, ঘাটাইলে ৯০০ হেক্টর, নাগরপুরে ১ হাজার ৭৫৬ হেক্টর, মির্জাপুরে ১ হাজার ১৬৮ হেক্টর, মধুপুরে ৯১ হেক্টর, ভূঞাপুরে ৪ হাজার ১২৫ হেক্টর, গোপালপুরে ২ হাজার ৯৪০ হেক্টর, সখীপুরে ১৪০ হেক্টর, দেলদুয়ারে ১ হাজার ৪৫৬ হেক্টর ও ধনবাড়ীতে ২১৭ হেক্টর জমিতে পাটের চাষ হয়েছে।

কৃষি অফিস ও স্থানীয় কৃষকরা জানায়, টাঙ্গাইলে দেশি, তোষা, মেশতা, রবি-১ জাতের পাটের আবাদ হয়েছে। তবে উচ্চ ফলনশীল তোষা জাতের পাট চাষ বেশি হয়েছে। প্রতি বিঘায় ৬ থেকে ১০ মণ পাট পাওয়া গেছে। পাট বিক্রি হচ্ছে তিন থেকে চার হাজার টাকায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, জেলার বিভিন্ন গ্রামে পাট কাটা, জাগ দেওয়া, পাট থেকে আঁশ ছাড়ানো ও শুকাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষীরা। এবার বর্ষায় নদী, নালা, খাল ও বিলে পানি থাকায় পাট জাগ দিতে তেমন কোনো সমস্যায় পড়তে হচ্ছে না চাষীদের। তবে দুই এক জায়গায় পানির অভাবে পাট জাগ দিতে পারেননি কৃষকরা।

নাগরপুর থানার ভাড়রা ইউনিয়নের কৃষক সামেজ উদ্দিন বলেন, ‘এ বছর আমি দুই বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। আবহাওয়া ভালো থাকায় পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। দুই বিঘা জমিতে ১২ মণ পাট ও ১ হাজার ২০০ আটি পাট কাঠি পেয়েছি। প্রতি মণ পাট ৩ হাজার ৮০০ টাকা ও প্রতি আটি পাট কাঠি পাঁচ টাকা দরে বিক্রি করেছি।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয়ের উপপরিচালক আহসানুল বাশার বলেন, ‘৩০০ পাট চাষীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় রবি-১ নামে পাট বীজ উৎপাদন করার জন্য চাষীদের বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে। চাষীদের যে কোনো সম্যস্যা সমাদানের জন্য আমরা সব সময় মাঠেই আছি।’

(এসএম/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৫, ২০২২)