রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে বিদ্যুতের দাবি ও লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ উত্তেজিত লোকজন পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও সড়ক অবরোধ করেছেন। এসময় কার্যালয়ের তিনটি কক্ষ ও পিক-আপ ভ্যানসহ কয়েকটি মোটরসাইকেলে আগুন দিয়েছেন। এতে কার্যালয়ের নিচে থাকা পিকআপসহ ৬টি মোটরসাইকেল সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। পরে ইউএনও শারমিন আলম’র আশ্বাসের প্রেক্ষিতে অবরোধ তুলে নেয় বিক্ষুব্ধরা।

বৃহস্পতিবার রাত ৯ টার দিকে উপজেলা শহরের নতুন বাজারের পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শুক্রবার সকালে পুলিশ ৫জনকে গ্রেফতার করে। পুলিশ যাচাই-বাছাই করছে জানিয়ে নাম প্রকাশ করতে অপারগতা জানান। হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় পল্লী বিদ্যুতের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

এদিকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যয় লক্ষ্মীপুর জেলা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের দাবীতে স্থানীয় একটি চাইনিজ সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে রায়পুরের বিদ্যুত পরিস্থিতি নিয়ে লিখিত বক্তব্য পেশ করেন লক্ষ্মীপুর জেলা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান জনাব সোলায়মান রুবেল। তিনি বলেন, রায়পুরে এক ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকলে তিন ঘণ্টা লোডশেডিং থাকে। যে এক ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে তখনও ভোল্টেজ খুব কম থাকে। এতে রেফ্রিজারেটর কিংবা টেলিভিশন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অতি দ্রুত এই সমস্যার সমাধান কল্পে কার্যকরি ব্যাবস্থা গ্রহনের দাবি জানান তিনি।

এছাড়াও বিদ্যুতের দাবিতে রায়পুর-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে টায়ার ও গাছের গুঁড়ি জ্বালিয়ে প্রায় ২ ঘন্টা রাস্তা অবরোধ করে রেখেছে বিক্ষোভকারীরা। এসময় তারার খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে বিক্ষোভে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নিয়িছেন।

স্থানীয়রা জানায়, অব্যাহত লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে সন্ধ্যা থেকে বিক্ষোভ করেন বিদ্যুৎ গ্রাহকসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার লোকজন। রাত ৮টার দিকে জনতা সড়কের ওপর গাছের গুঁড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ করেন। এ সময় তারা বিদ্যুৎ অফিসে ঢুকে দরজা জানালা ভাংচুর ও অফিসের সামনে থাকা একটি পিক-আপ ভ্যান ও ৬টি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করেন। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে রায়পুর শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

পল্লী বিদ্যুতের রায়পুর জোনাল অফিসের ডিজিএম মাহফুজুর রহমান বলেন, পর্যাপ্ত বরাদ্ধ না পাওয়ায় সরবরাহ ব্যবস্থায় বিঘ্নতার সৃষ্টি হচ্ছে। বিক্ষুব্ধ গ্রাহকরা অফিসে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে ৩টি অফিস কক্ষ, ৬টি মোটর সাইকেল ও একটি পিকআপভ্যান জ্বালিয়ে দেয়। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। এছাড়াও রায়পুরে সাবস্টেশন না থাকার কারণে লোডশেডিং হচ্ছে।

রায়পুর থানার ওসি/তদন্ত সোলায়মান চৌধুরী বলেন, বিক্ষুব্ধদের শান্ত করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছে। বিদ্যুৎ অফিসসহ শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কেউ অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আলম বলেন, অপ্রীতিকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বিক্ষুব্ধ গ্রাহকদের শান্ত রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।

(ওএস/এটিআর/অক্টোবর ১০, ২০১৪)